প্রচ্ছদ সারাদেশ নির্বাচনের শেষ দশদিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, দেখেন কি হয়: সাবেক এমপি পাপিয়া

নির্বাচনের শেষ দশদিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, দেখেন কি হয়: সাবেক এমপি পাপিয়া

সারাদেশ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বেশ কিছু দল প্রচারে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো নির্বাচন বন্ধ করতে আন্দোলনে রয়েছে। এছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা, এ নিয়ে দেশ বিদেশে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। রাজনীতির এই সন্ধিক্ষণে চলমান আন্দোলন, বিরোধীদের প্রতি সরকারের কঠোরতা নিয়ে চ্যানেল 24 অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া।

সরকারের অবস্থান নিয়ে সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া বলেন, আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে খুব মর্মাহত। কারণ, ক্ষমতা দখল করে রাখতে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তাদেরকে বিতর্কিত করা হয়েছে। কেউ সরকারের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে তো পৃথিবীর বুকে থাকতে পারবে না। তাদের গুম করবে, অপহরণ করবে। বিচারপতি সিনহার মতো অবস্থা করবে। সালাহউদ্দিন সাহেব ১৪ সালের আন্দোলন করতে গিয়ে প্রেস রিলিজ দিতো, তাই তাকে ভারতীয় সীমান্তে পাওয়া গেল। ইলিয়াস আলী টিপাইমুখের বাঁধ নিয়ে কথা বলতো জোরালো ভাষায়। আজও ইলিয়াস আলীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২৮ অক্টোবরের মিটিংয়ে কত ছেলের যে খোঁজখবর নেই। বাড়ি ছাড়া অসংখ্য নেতাকর্মী। ২৮ অক্টোবর আমরা সরকারের ফাঁদে আমরা পা দেই নি। একতরফা ভোট করে ক্ষমতার গদি অক্ষত রাখতে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। এই পরিকল্পনা তাদের পূর্ব নির্ধারিত। তারা প্রথমে চেষ্টা করেছিল আমাদেরকে ভেন্যু না দিতে। যখন তারা ভেন্যু দিল, তখন তারা বি প্ল্যানে গেলো। এ প্ল্যান হচ্ছে ভেন্যু না দেয়া, আর বি প্ল্যান হচ্ছে আমরা যেখানে প্রোগ্রাম করি সেটা ভণ্ডুল করা।

সমাবেশে লোকসমাগম দেখে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তখন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সমাবেশে আগত মানুষদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন জায়গাগুলোতে হামলা করেছে। যেমন-রাজারবাগ পুলিশ লাইন। সেখানে ছাদের ওপর ওঠে ককটেল কে ফেলছে, সেটা কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে। কর্তৃপক্ষের অগোচরে কেউ যদি করে থাকে, তাহলে কর্তব্য অবহেলার কারণে তাকে শোকজ করা উচিত ছিল। এসব ঘটনা উৎঘাটনের ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ভূমিকা পালন করেনি। প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা করে আমাদের ঘাড়ে চাপানোর যে নীল নকশা, এটাতে বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনকে হামলা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। বিএনপি নেতাদের স্থায়ীভাবে আটকানোর জন্য ও কোর্ট কাচারিতে জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা বিব্রতবোধ করতে সেনসেটিভ বিষয় তৈরি করল সরকার।

জামিনগুলো আমরা যেভাবে পেতাম, সেগুলো রুদ্ধ করে দিলো। সরকার খুব ঠাণ্ডা মাথায় বিরোধী দলকে নিধন করার জন্য এসব কাজে করছে। আমাদের ওপরে দোষ চাপাতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্যাগোডা, মন্দিরে ও নারীদের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। সরকারের কৌশল মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে পাপিয়া বলেন, আসলে আমরা আত্মগোপনে যাই নি। সরকার তো অনেক লম্বা সময় ধরে কৌশল করে চলছে। নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তফসিল ঘোষণার দিন, তারিখ, বাছাই থেকে প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্ধ থেকে নির্বাচনের তারিখ পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। এ তারিখগুলো বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর তারপর বড়দিনের প্রোগ্রামের সঙ্গে কৌশল মিলিয়ে ফেলা হয়েছে। আমাদেরও তো কিছু কৌশল আছে। নির্বাচনের শেষ দশদিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তখন দেখবেন আমরা সক্রিয় হই কিনা। আমি সক্রিয় ছিলাম, সক্রিয় আছি, সক্রিয় থাকব। সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় এমপিদের যে পারফরম্যান্স দরকার ছিল, তা করেছি। এখন সাধারণ নাগরিক হয়ে হরতাল অবরোধে মানিক মিয়া এভিনিউ, সংসদ ভবন চত্বরে আমি মাঠ গরম করতে পারব না। এমপিদের বক্তৃতা বিবৃতি সবমিলিয়ে একটা সুবিধা থাকেই। এখন যেহেতু আমি এমপি নয়, স্বাভাবিক কারণেই দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমার যে পদ, সেই পদ মাফিক আছি। যেকোনো জনসভা হলে সেখানে আমি উপস্থিত থাকি, কিন্তু আমার বক্তৃতা রাখার ইখতিয়ার নেই। কারণ অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে শুরু করে কিংবা যুগ্ম মহাসচিবরা বক্তব্য রাখেন। স্বাভাবিকভাবে আমি সেই পদ হোল্ড করি না। পদ হোল্ড না করার কারণে মঞ্চে উপস্থিত থাকি একজন শ্রোতা-দর্শক একজন কর্মী হিসেবে। ২৮ অক্টোবরে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া বলেন, পুলিশের মৃত্যু যেমন মর্মান্তিক, সাংবাদিকের মৃত্যুও মর্মান্তিক। একইভাবে সাধারণ মানুষ যারা সমাবেশ দেখতে এসেছে, তাদের ওপর হামলাও মর্মান্তিক। এমনও তো হতে পারে ওই পুলিশ সরকারের বিপক্ষ মন মানসিকতা পোষণ করতো। যার কারণে তারাই তাকে মেরে ফেলে আমাদের হত্যা মামলার আসামি করেছে। একটি পাতানো ঘটনা তৈরি করে আজকে মৃত মানুষকে ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় আসামি করা হচ্ছে। যে দু’বছর ধরে জেলখানায় আছে, তাকেও আসামি করা হয়েছে। যে মানুষটা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হাটতে চলতে পারে না, তাকেও বলেছে যে, সে হামলা করেছে। যে লোকটার হাত পঙ্গু, তাকে বলা হচ্ছে সে ককটেল ফাটিয়েছে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।