আজকের সেরা সংবাদ: মহানগর জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে বোমা বিস্ফোরণের মূল পরিকল্পনাকারী মুকিত ওরফে ‘বোমা মাওলানাকে’ গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি জানায়, বোমা মাওলানা গত ২৭ অক্টোবর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গানপাউডার সংগ্রহ করে প্রায় ৪০০ বোমা তৈরি করেন। পরে এসব বোমা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই করেন। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ডিবি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।
দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বোমা বানাতে গানপাউডার সাপ্লাই দেন যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। নাশকতা কিংবা আগুন দেওয়ার যে কোনো ছবি লন্ডনে পাঠানো হলে, তাদের পুরস্কৃত করা হতো। বোমা মাওলানার সাপ্লাই করা বোমার মধ্যে একটি বোমা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ করা হয়। সেটির মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বোমা মাওলানা। সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি পরিমাণ গান পাউডার ভাটারা থানার যুবদলের আহবায়ক রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে বোমা মাওলানা গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, রিসিভ করা গান পাউডার দিয়ে কয়েক দফায় প্রায় চারশ হাতবোমা তৈরি করেন বোমা মাওলানা। পরে তিনি এসব বোমা সাপ্লাই দেন বিভিন্ন থানার যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের। তার সরবরাহ করা হাতবোমা থেকে একটি যুবদলের সদস্য সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোট আদালতের প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ ঘটান ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার। ডিবি জানায়, আমরা অনেক দিন ধরে মুকিত হোসাইন ওরফে বোমা মাওলানার খোঁজে ছিলাম। তার নাম হলো মুকিত, তবে সবাই তাকে ডাকে বোমা মাওলানা নামে। এক সময় তিনি আলিয়া মাদরাসা ছাত্রদল শাখার সহ-সভাপতি ও সভাপতি ছিলেন। পরে মুকিত ছাত্রদল মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কবজি উড়ে যায়। এরপর থেকে তার নাম হয় বোমা মাওলানা। দলীয় আনুগত্য ও উগ্র বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করেন স্বয়ং তারেক জিয়া।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য আগুন দাতাদেরকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রায় ছয়-সাত হাজার লোকের মিছিলে নেতৃত্ব দেন বোমা মাওলানা। হারুন অর রশীদ বলেন, নাশকতার জন্য যারা বোমা বানায় এবং বাস ও ট্রেনে যারা নাশকতা করে, তাদের অনেকের নাম পেয়েছি। এ বোমা মাওলানা ২৭ অক্টোবর একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আর সেখানে বসে তিনি পরিকল্পনা করছিলেন কোথা থেকে বোমা বানানোর সরঞ্জাম সংগ্রহ করা যায়, আর কাকে দিয়ে এসব বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কাকে পঙ্গু করা যায়। তিনি আরও বলেন, লন্ডন থেকে আসা নির্দেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি ছড়ানোর কাজে ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণে ৮টি টিম গঠন করা হয়। মুকিতের দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সঙ্গে সমন্বয় করা। সমন্বয় করে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো। এছাড়া গ্রেপ্তার মুকিত ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদল কর্মীদের দিয়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ায় কমপক্ষে ৬টি ঘটনার সমন্বয় করেছে। আমরা তার কাছ থেকে অনেক তথ্য পেয়েছি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |