প্রচ্ছদ দেশজুড়ে ভিউয়ের আশায় কেন আমরা মৃত মানুষকেও ছাড়ছি না: পরীমণি

ভিউয়ের আশায় কেন আমরা মৃত মানুষকেও ছাড়ছি না: পরীমণি

চিত্রনায়িকা পরীমণির প্রথম স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার খবর বেশ চর্চিত হচ্ছে। ২২ নভেম্বর ভোরে ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কের মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় একটি দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে সকাল থেকে পরীমনির ফেসবুক পোস্টে জানা যায়, সন্তানসহ তিনি ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে গেছেন। নানা শামসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর এই যাওয়া।

গতকাল শনিবার বিকালে পরীমণি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘নিয়তির ডাকে দিলে যে সাড়া, ফেলে গেলে শুধু নীরবতা। যার চলে যায় সেই বোঝে হায়, বিচ্ছেদের কি যন্ত্রণা!’

নেটিজেনদের অনেকে মনে করছেন প্রাক্তন স্বামীর মৃত্যু হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাচ্ছেন পরীমণি। প্রথম স্বামীর মৃত্যু খবর ভাইরাল দেশের গণমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সয়লাব এই সংবাদ দেখে বিরক্ত, ক্ষুব্ধ আলোচিত এই নায়িকা। দেশের একটি গণমাধ্যমে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। নায়িকার ভাষ্য, ‘কারও মৃত্যু তো হাসি-তামাশার বিষয় নয়। ইসমাইলের মৃত্যু নিয়ে যে যেভাবে পারছেন, খবর প্রকাশ করেছেন। উৎসব উৎসব ভাব মনে হচ্ছে। এটা সত্যিই কষ্টদায়ক। এমনটা মোটেও আশা করিনি।’

এতদিন গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ইসমাইল হোসেন পরীমণির প্রথম স্বামী। আসলে প্রয়াত ইসমাইলের সঙ্গে কি সম্পর্ক নায়িকার? নায়িকা জানান, ‘ইসমাইল হোসেন জনি আমাদের আত্মীয়। আমার খালাতো ভাই। আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি। বয়সে যদিও আমার চেয়ে ৫-৬ বছরের বড়, তারপরও আমাদের সম্পর্কটা ছিল খুবই চমৎকার।’

পরী আরও বলেন, ‘এবার বাড়িতে আসার পরই আমার মা (খালাকে মা বলে ডাকেন পরীমনি) বললেন, “ও (ইসমাইল) তো বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করছে।” আমি বললাম, “কী!” “পরে বললেন, “ও তো মারা গেছে!” এলাম নানুভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে, এসে শুনি ইসমাইলের মৃত্যুর খবর! এটা মেনে নেওয়া যে কতটা কষ্টের, বলে বোঝাতে পারব না।’

তবে নায়িকার ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলেও কোনো জবাব দেননি। তবে জানালেন, প্রয়াত ইসমাইলকে দেখতে জানিনি তিনি। তবে প্রয়াতের বাবাসহ তিনি কবর জিয়ারতে গেছেন বলে জানান।

এদিকে প্রয়াত ইসমাইল দুই সন্তানের জনক। নায়িকার সঙ্গে জড়িয়ে এভাবে মৃত্যুসংবাদ প্রচারে কষ্ট তাঁর পরিবারেরও বলে জানান পরী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সবারই তো সমাজ আছে, সংসার আছে, পরিবার আছে, আছে স্ত্রী-সন্তানও। কিন্তু একটা মানুষের মৃত্যুর পর যেভাবে আমাকে জড়িয়ে খবর প্রকাশ হচ্ছে, এতে আমরা কি এভাবে সেই মৃত মানুষকে সম্মান জানাচ্ছি? এভাবে অসম্মান করার অধিকার কি আমরা কেউ রাখি? তার নিজের কি কোনো পরিচয় নেই। আর আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্কের সূত্র খুঁজেও আপনারা যদি কিছু লিখতেও চান, তা-ও তো সেটা এখন লিখতে পারেন না। তা–ও এভাবে! আমরা কেন একজন মৃত মানুষকে নিয়ে এভাবে লিখছি! আমি আর নিতে পারছি না এসব। আমিও তো মানুষ, আমারও আবেগ, অনুভূতি, ভালো লাগা, কষ্ট লাগা, দুঃখবোধ আছে।’

হতাশা প্রকাশ করে নায়িকা আরও জানান, ‘একটু লাইক–কমেন্ট, একটু ভিউয়ের আশায় কেন আমরা মৃত মানুষকেও ছাড়ছি না! আমরা কি মানবিক মূল্যবোধের মানুষ হতে পারি না।’

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।