প্রচ্ছদ সারাদেশ সীমান্তে নিহত স্বামী, কোলের দুই সন্তান নিয়ে নির্বাক স্ত্রী

সীমান্তে নিহত স্বামী, কোলের দুই সন্তান নিয়ে নির্বাক স্ত্রী

সারাদেশ: যশোর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্য রইস উদ্দিনের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। দুই বছরের শিশু রাইসা ও চার মাসের হাসান আলীকে নিয়ে লাশের অপেক্ষায় নির্বাক স্ত্রা নাসরিন খাতুন। ভবিষ্যত নিয়েও দিশেহারা তিনি। সাংবাদিকদের দেখে ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে তার একটাই আর্তি, কোথায় থাকবেন, দুই শিশুকে নিয়ে কোথায় যাবেন। আর দাবি জানালেন, যেন লাশ দ্রুত ফেরত দেওয়া হয়। রইস উদ্দিনের বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকা সাহাপাড়ার শ্যামপুর গ্রামে। বাবা কৃষক কামরুজ্জামান।

মঙ্গলবার সরেজমিন রইস উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার টিনের একচালা একটি ঘর ও রান্না ঘর তালাবদ্ধ। বাড়ির প্রধান ফটকে নেই কোনো দরজা। শীতের কারণে দুই শিশুকে নিয়ে স্ত্রী নাসরিন রইসের বড় ভাইয়ের বাড়িতে উঠেছেন। বিএসএফের গুলিতে স্বামী মারা যাবার পর এ বাড়িতেই গ্রামবাসীরা একনজর তাকে দেখতে ভিড় করছেন। অনেকে আসছেন খোঁজ নিতে লাশ এসেছে কিনা, সান্তনা দিতে। আবার কেউ কেউ আসছেন পরিবারটির খোঁজ নিতে। রইস উদ্দিনের বাবা কামরুজ্জামান জানান, তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট রইস উদ্দিন ছিল পরোপকারী। এ সময় তিনি নাতি-নাতনিকে মানুষ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

রইসের বন্ধু মমিন জানান, ছাত্র জীবন থেকেই সে সব সময় বিপদগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আট বছর চাকরির পরও তার কোনো সঞ্চয় বা একটি বাড়িও নেই। সে গ্রামের সবার বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়লেও এখন তার পরিবারটি অসহায়। স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম হোসেন দাবি, গতবার গ্রামে এসে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিল। পরে কয়েকটি জানালা বানিয়ে দেবে বলেও জানিয়েছিল। তার মতে, একজন সমাজ সেবককে তারা হারালেন। সরকার যেন অসহায় এ পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়।

স্থানীয় মহিলা ওয়ার্ড সদস্য শাহনাজ পারভিন লিলির দাবি, দ্রুত লাশটি পরিবারে হস্তান্তর করা হোক এবং সরকার পরিবারের দায়িত্ব নিক। ভারতের সুটিয়া ও বাংলাদেশের ধান্যখোলা সীমান্ত এলাকা দিয়ে সোমবার ভোরে চোরাকারবারিরা গরু আনছিল। বিষয়টি টের পেয়ে বিএসএফ তাদের ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে চোরাকারবারীদের ধরতে সিপাহী রইস উদ্দিন দলছুট হয়ে সীমান্তে এগিয়ে গেলে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে আহত হন। পরে বিএসএফ সদস্যরা ভারতের একটি হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুর দুইটার দিকে মারা যান।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।