দেশজুড়ে:স্বপ্নে আলামত পেয়ে নিজের কবর নিজেই খুঁড়লেন প্রায় ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মনতাজ উদ্দিন সরদার। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে তিনি একাই ঈদের নামাজ আদায় করে এলাকায় ব্যাপক আলোচিত হয়েছিলেন। মনতাজ উদ্দি বগুড়ার শাজাহানপুরে উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর সরদারপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিন সরদারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল ৯টায় মনতাজ উদ্দিন নিজ বাড়ির সামনে ভাতিজা চাঁন মিয়া ও প্রতিবেশী শাফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে নিজের জন্য কবর খনন শুরু করেন তিনি। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর আগেও তিনি ঈদের নামাজ একাই আদায় করে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিলেন। বৃদ্ধ মনতাজ পাগলা আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দুইবার। তার সঙ্গে থেকেছেন। রাতে ঘোরাফেরাও করেছেন। মৃত এই পীর মনতাজকে বলেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে তোর মৃত্যু হবে। কবর নিজেই খুঁড়ে নে। এরপর নিজের কবর নিজেই খোঁড়া শুরু করেছেন মনতাজ আলী। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুজন ব্যক্তিকে নিয়ে কবর খুঁড়ছেন মনতাজ। তাকে ঘিরে উৎসুক মানুষ জড়ো হয়ে কবর খোঁড়ার দৃশ্য দেখছেন।
কেন জীবিত অবস্থায় কবর খুঁড়ছেন জানতে চাইলে মনতাজ জানান, তিনি একজন পীরভক্ত। সামাজিকতার চেয়ে তিনি একাই থাকতেই পছন্দ করেন। এমনকি বছরে দুটি ঈদের নামাজও তিনি একাই আদায় করেন। নিজের কবর নিজে খুঁড়ে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, এক মাস আগে স্বপ্নে আলামত পেয়েছেন তিনি। এরপর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে কবর খোঁড়ার কাজ সম্পন্ন করেন।
তিনি জানান, অনেক বছর আগে ভাই পাগলা নামক এক পীর তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন বিভিন্ন বিষয়ে ওই পীরের সঙ্গে তার কথা হয়। তার সেই পীর বর্তমানে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়ায় অবস্থিত ভাই পাগলা মাজার শরীফে শায়িত আছেন।
মনতাজ সরদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক জানান, নিজের কবর নিজে খুঁড়ে রাখার বিষয়টি একমাস আগে স্বপ্ন দেখেন বাবা। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি অগ্রিম কবর খুঁড়ে রাখলেন। আপাতত কবরটি বালু দিয়ে ভর্তি করে রাখা হবে। তার (মনতাজ সরদারের) মৃত্যুর পর বালু তুলে সেখানে লাশ দাফন করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, মনতাজ একজন পীরভক্ত মানুষ। সমাজের কারও সঙ্গে তার তেমন মেলামেশা নেই। ঈদের দিন বিকেলে পাশের ঈদগাহের মাঠে গিয়ে একাই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। মনতাজ উদ্দিন শুধু এক ওয়াক্ত (ফজরের) নামাজ পড়েন। তিনি ছোটবেলা থেকে খালি গায়ে চলাচল করতেন। মনতাজ একজন আধ্যাত্মিক মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
আশেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হয়রত আলী বলেন, মৃত্যুর আগেই কবর খুঁড়ে রাখার বিধান কী আমার জানা নেই। তবে ওই ব্যক্তি যদি অসিয়ত করেন তবে আমরা তার মৃত্যুর পর ওই স্থানে কবর দেওয়ায় ব্যবস্থা করব।
বগুড়া সেন্ট্রাল বায়তুর রহমান মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা বিলায়াত হোসেন জানান, ইসলাম এমন বিষয়কে কোনোভাবেই সমর্থন করে না।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |