প্রচ্ছদ খেলাধুলা অস্ত্রোপচার হয়েছে সাকিবের আঙুলে? কমেন্ট্রি বক্স থেকে যে প্রশ্ন রাখলেন তামিম

অস্ত্রোপচার হয়েছে সাকিবের আঙুলে? কমেন্ট্রি বক্স থেকে যে প্রশ্ন রাখলেন তামিম

খেলাধুলা: পাকিস্তানকে তাদের ঘরের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাসের পালে বাড়তি হাওয়া নিয়ে ভারতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ। বাবর-রিজওয়ানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয় নিশ্চিতভাবেই মানসিকভাবে ফুরফুরে রেখেছিল টাইগারদের। ধারণা ছিল ভারতের বিপক্ষে নতুন এক বাংলাদেশকে দেখবে সমর্থকরা। যার অগ্রভাগে বল হাতে নেতৃত্ব দিবেন অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান। কারণটা অবশ্য সবারই জানা। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে ইংল্যান্ডে চলে যান দেশসেরা এ অলরাউন্ডার। সেখানে তিনি কাউন্টি দল সারের হয়ে একটি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ ১৩ বছর পর কাউন্টিতে ফিরেই বল হাতে ৯ উইকেট তুলে নেন। তাই তো চেন্নাইয়ের স্পিনিং উইকেটে বাংলাদেশের নাম্বার সেভেনটি ফাইভ দারুণ কিছু করবেন এটাই ছিল প্রত্যাশা।

কিন্তু চেন্নাইয়ে টাইগার পেসাররা নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দিলেন ব্যর্থ ছিলেন ব্যাটাররা। ভারতীয় বোলারদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে সাদমান-মুশফিকরা। টেস্টের প্রথম দিনের দুই সেশন নিজেদের পক্ষে রাখতে পারলেও এরপর শুধুই ভারতের জয়ধ্বনি। পেসাররা যখন প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রানে ভারতের ৬ উইকেট তুলে নেন তখন ধারণা করা হচ্ছিল জমজমাট লড়াই হতে যাচ্ছে চেন্নাই টেস্ট। কিন্তু অশ্বিন-জাদেজার ১৯৯ রানের সেই বিশাল জুটি বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে ফেলে। বল হাতে কার্যকরী ভূমিকায় দেখা যায়নি সাকিববে। প্রথম ইনিংসে সাকিব ভারতীয় ইনিংসের ৫৩তম ওভার করতে আসেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ম ওভারে বোলিংয়ে আসলে তাকে কখনোই মনে হয়নি সাকিব সুলভ। বোলিং কম করেছেন, করলেও ছিলেন না কার্যকরী। পাকিস্তান সফর করে কাউন্টি মাতিয়ে আসা সাকিব কেন এমন নিষ্ফলা তা খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন সকলেই।

কারণ যেই সাকিব কাউন্টিতে দলের প্রয়োজনে করেছেন প্রায় ৬৪ ওভার। তুলে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। সেই সাকিবই দিন ছয়েক পরেই চেন্নাইয়ের দুই ইনিংস মিলিয়ে করেছেন মাত্র ২১ ওভার। ছিল না কোনো উইকেট। কেন সাকিবের এমন দশা। সবাই যখন সাকিবের এমন দশার কারণ খুঁজছিলেন তখন তার উত্তর পাওয়া গেল ভারতীয় ধারাভাষ্যকার কার্তিকের সুবাদে। কমেন্ট্রি বক্সে এসে ভারতের সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার জানান তৃতীয় দিনের শুরুতে সাকিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। সেখানে কি কথা হয়েছে সেটি জানিয়ে কার্তিক বলেন, তাকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী কারণে সে কম বোলিং করছে। সে আমাকে যা বলেছে, তা একজন স্পিনার হিসেবে আমি তা বুঝতে পারছি। এরপরই সাকিবের ইনজুরির বিষয়ে কার্তিক বলেন, তার বাঁ হাতের স্পিনিং ফিঙ্গারে একটা অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সেটি এখন ফুলে গেছে, শক্ত হয়ে আছে। ওই আঙুলে সে বলের অনুভূতিটাও পাচ্ছে না। স্পিনার হিসেবে বলের অনুভূতিটা দরকার। এ ছাড়া তার কাঁধেও অস্বস্তি আছে।

এ সময় ধারাভাষ্যকক্ষে কার্তিকের সঙ্গে ছিলেন সাকিবের দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম। কার্তিকের এমন ব্যাখ্যার পরেই তামিম টিম ম্যানেজমেন্টের উদ্দেশ্যে এক প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, কার্তিক বলে গেছে, আঙুলের সমস্যার কারণে সাকিব বল গ্রিপ করতে পারছে না। যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশ চারজন ফ্রন্টলাইন বোলার নিয়ে খেলছে। টিম ম্যানেজমেন্টের অবশ্যই জানানো উচিত, তারা এই ইনজুরির কথাটা আগে থেকেই জানত কি না। সাকিবের ইনজুরির বিষয়টি চাউর হওয়ায় বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানান, সাকিব কিন্তু আমাদের কাছে আঙুল নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। এটা ঠিক, ওর ওখানে (আঙুলে) চিড় ছিল। তখন আঙুল বেঁধে রেখেছিল কিছুদিন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হলো। সেখানে তো আঙুল নিয়ে তার কোনো অভিযোগ শুনিনি। এরপর সার্জারি হলে তো আমরা জানতাম। তার সর্বশেষ সার্জারি হয়েছিল সেই এশিয়া কাপের সময় (২০২৩ সালে)। এরপর সার্জারি হয়নি, ফ্র্যাকচার হয়েছে ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারতে। ভেঙে যাওয়া সেই আঙুলে এখনো কোনো অস্বস্তি থেকে যেতে পারে বলে ধারণা দেবাশীষের। তিনি বলেন, সে তো মোটামুটি খেলছেই। এমন হতে পারে, ওর হয়তো এখন কিছুটা অস্বস্তি লাগছে। এটা থাকতে পারে। একটা আঙুল যদি ভেঙে যায়, তখন কিন্তু সেটা আর আগের জায়গায় আসে না। এটা তো ভাঙা জিনিস। একদমই আগের মতো হবে না। সে ওটাকে ম্যানেজ করে খেলছে। আমাদের হয়তো জানায়নি। কিন্তু অস্বস্তি থাকতেও পারে। প্রসঙ্গত, গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে বাঁহাতির তর্জনী ভেঙে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচে না খেলে সাকিব দেশে ফিরে আসেন।

সূত্র : Channel 24

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।