প্রচ্ছদ দেশজুড়ে এই বয়সে আর পারি না, আল্লাহ হয়ত এমনটাই চেয়েছিলেন

এই বয়সে আর পারি না, আল্লাহ হয়ত এমনটাই চেয়েছিলেন

দেশজুড়ে :দিনাজপুরে ঘোড়াঘাটে স্বামী পরিত্যক্তা ষাটোর্ধ্ব ভূমিহীন রাহেলা বেগম এর জীবন কাটছে জরাজীর্ণ সরকারি পরিত্যক্ত বিএস কোয়ার্টারে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া অসহায় রাহেলার জীবন সংগ্রামের শেষ কোথায়।

জানা গেছে, বৃদ্ধা রাহেলার প্রথম স্বামী চান মিয়া এক ছেলে সন্তান রেখে মারা যায়। পরবর্তীতে রাহেলার উপজেলার সাতপাড়া গ্রামের শুকরান আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। এরপর দ্বিতীয় স্বামীর সংসারেও তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। রাহেলা বিয়ের ৩/৪ বছর পর ১ম পক্ষের ছেলে আব্দুর রহিমের বিয়ে দেয়। এক বছর পর রহিমও একটি পুত্র সন্তান লাভ করে। রহিমের ছেলের বয়স যখন ২ বছর তখন সেও মারা যায়। এ সময় রাহেলার ২য় স্বামীর পক্ষের সন্তান বাবলু মিয়ার বয়স ৬ বছর। বিয়ের ৬ বছর সংসার করার পর স্ত্রী-সন্তানকে রেখে নিরুদ্দেশ হয় রাহেলার ২য় স্বামী শহিদুল। এ সময় ঘরে এক পুত্র ও এক নাতির ভরণ পোষণের দায়িত্ব পড়ে যায়।

রাহেলা জীবন জীবিকার তাগিদে সাত পাড়া গ্রাম থেকে দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ও ১ম পক্ষের মৃত সন্তানের ছেলে আমিরুল ইসলামকে নিয়ে উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে আসে। এসময় তার কোথাও থাকার স্থান না হওয়ায় রানীগঞ্জের দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামে অবস্থিত সিংড়া ইউনিয়নের পরিত্যক্ত বিএস কোয়ার্টারে আশ্রয় নেয়।

বৃদ্ধা রাহেলার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি একজন ভূমিহীন। আমার জায়গা জমি না থাকায় কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখে পরিষ্কার করে বসবাস শুরু করি। প্রায় দেড় যুগ পার হয়ে গেছে কিন্তু এখানে বসবাস করলেও জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। কারণ ঝড়বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়ি নড়ে ওঠে। তাই জীবন বাঁচাতে কোয়ার্টার ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে হয়। ঝড় বৃষ্টি থামলে আবার কোয়ার্টারে আসি। উপর থেকে চুয়ে চুয়ে পানি পরে। ছাদ ঢালাইয়ের সিমেন্টও খসে পড়ে। মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়বে! একটা ঘরের জন্য এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে অনেকদিন ঘুরেছি লাভ হয়নি।

কিছুদিন পূর্বে ইউএনও স্যার আমাদের দেখে গেছেন। আশ্রয়ণের ঘর দিতে চেয়েছেন। হোটেলে, মানুষের বাড়িতে কাজ করতে করতে আমার হাত পায়ে ঘা হয়ে গেছে। এখন কেউ আগের মত আর কাজ দিতে চায় না। এভাবেই টুকটাক কাজ করে, এখানে ওখানে চেয়ে খেয়ে বেঁচে আছি। এই বয়সে আর পারি না। আল্লাহ হয়ত এমনটাই চেয়েছিলেন। ছেলেটি বৌ সন্তান নিয়ে ঢাকায় কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করছে, সংসারই ঠিক মতো চলে না, আমাকে দেখবে কেমনে? নাতিটা হোটেলে হোটেলে মেসিয়ারের কাজ করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে জানান, আমরা পরিত্যক্ত ভবনগুলো পরিদর্শন করেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওখানে বসবাসরত ভূমিহীনদের ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।