প্রচ্ছদ সারাদেশ ‘এক চীন’ নীতি: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সমর্থন জানাল যেসব দেশ

‘এক চীন’ নীতি: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সমর্থন জানাল যেসব দেশ

সারাদেশ: বিশ্ব রাজনীতিতে চীন-তাইওয়ান সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। একদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন বলে দাবী করে অপরদিকে চীন মনে করে অঞ্চলটি তাদের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। চীন বারবার দৃঢ়ভাবে দাবি করেছে, তাইওয়ান তাদের ভূখণ্ড এবং দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে তারা স্বীকার করে না।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া সোমবার (১৫ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, বেলারুশ, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি, পাপুয়া নিউগিনি, কিউবা, ভেনেজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশ ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। উক্ত দেশগুলো ছাড়াও সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা এবং আরব লিগের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

নাউরু কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের পর তাইওয়ানের সাথে আর মাত্র ১২টি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক রইলো। তার মধ্যে ভ্যাটিকান, গুয়াতেমালা, প্যারাগুয়ে, প্রশান্ত মহাসাগরের পালাউ, টুভালু এবং মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ উল্লেখযোগ্য। তবে কোন দেশই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে না। সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরপরই দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে নাউরু। পাশপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সোমবার ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুকে শেয়ার করা পোস্টে বলেছে, ‘তাইওয়ানের সাম্প্রতিক নির্বাচনকে বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেছে। বাংলাদেশ ‘এক চীন’ নীতি দৃঢ়ভাবে মেনে চলার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে যেকোনো ধরনের অপ্রয়োজনীয় উসকানি থেকে বিরত থাকার জন্য এবং জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও স্থায়িত্বের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।’

এদিকে চীনের ঘনিষ্ঠ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে। তবে তাইওয়ানের বিপদের দিনে দেশটির পাশে দাঁড়াচ্ছে না তার ঘনিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। গত ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) প্রার্থী উইলিয়াম লাই বা লাই চিং-তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। নির্বাচনের এই ফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আমরা (তাইওয়ানের) স্বাধীনতা সমর্থন করি না…।’ উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাইপের পরিবর্তে বেইজিংকেই কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি বলে বলে আসছে, তারা তাইওয়ানের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাকে সমর্থন করে না। তা সত্ত্বেও তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৮১টি দেশ ‘এক চীন নীতি’র ভিত্তিতে চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। ‘এক চীন নীতি’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সার্বজনীন ঐকমত্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি মৌলিক আদর্শ হিসেবে কাজ করছে। পরে, এই নীতি ১৯৭১ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজোল্যুশন ২৭৫৮ দ্বারা স্পষ্টভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।