প্রচ্ছদ বাংলাদেশ কী এই এল নিনো, যেটার কারণে এত গরম বাংলাদেশে

কী এই এল নিনো, যেটার কারণে এত গরম বাংলাদেশে

বাংলাদেশ: বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা এতটাই বেড়েছে যে অনেকে এটি সহ্য করতে পারছেন না। ফলে হিটস্ট্রোকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়ছেন দেশগুলোর সাধারণ মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) জানায়, এসব দেশে এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি তাপ পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা ‘এল নিনোর’ কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এল নিনো এই অঞ্চলে উষ্ণ পানি ও শুষ্ক অবস্থা নিয়ে আসে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে।

এল নিনো কী?
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, এল নিনো হলো একটি জলবায়ু প্যাটার্ন। এটির মাধ্যমে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পানি উষ্ণ হয়ে পড়ে।

এল নিনোর প্রভাব পড়ে— সমুদ্রের তাপমাত্রা, গতি, মহাসাগরীয় স্রোত, উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের স্বাস্থ্য এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার এবং এরও বাইরের অঞ্চলের ওপর।

এল নিনো দুই থেকে সাত বছরের বিরতি দিয়ে অনিয়মিতভাবে হয়ে থাকে। এল নিনো কোনো নিয়মিত চক্র নয় অথবা এ নিয়ে আগে থেকে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না।

পেরুর উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা এল নিনো সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন সমুদ্রের পানির অস্বাভাবিক উষ্ণতা দেখে। আবহাওয়ার এই বিশেষ অবস্থাকে পেরুর আদিবাসীরা কি নামে ডাকতেন সেটি জানা যায়নি। তবে স্প্যানের অভিবাসীরা এটিকে এল নিনো নামে ডাকতেন। যার বাংলা অর্থ ‘ছোট বালক’। পরবর্তীতে এল নিনোর মাধ্যমে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি বোঝানো শুরু হয়।

এল নিনোর কারণে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় দেশ পেরু, ইকুয়েডর ও চিলির উপকূলে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে এক প্রকার উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়।

এই উষ্ণ স্রোতের কারণে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী শীতল সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ভিদ প্ল্যাংকটনের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং স্থলভাগের তাপমাত্রা বাড়ে।

এল নিনোর প্রভাবে প্রশাসন্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খরা বা অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। কোনো কোনো অঞ্চলে অতিবর্ষণও ঘটে থাকে। সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর স্থায়ী হয় এল নিনো।

গত বছরের এপ্রিলে জলবায়ুবিদরা এল নিনোর ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, ২০২৩ সালে এটির প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। যদি ২০২৩ সালে প্রভাব না পড়ে তাহলে ২০২৪ সালে এটি বেশ ভালোভাবে পরিলক্ষিত হবে।bসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, রয়টার্স

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।