প্রচ্ছদ রাজনীতি ছাত্র রাজনীতি মানে রুটি রোজগারের ফন্দি ফিকির নয়

ছাত্র রাজনীতি মানে রুটি রোজগারের ফন্দি ফিকির নয়

রাজনৈতিক: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি মানে ক্ষমতার দাপট, বাহাদুরি, ব্যক্তিগত রুটি রোজগার বাড়ানোর জন্য ফন্দি ফিকির নয়। ছাত্র রাজনীতি মানে তরুণদের কাছে শিক্ষার্থীদের কাছে আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবেন।

তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ব্যক্তিত্ব থাকবে দৃঢ়, তারা হবে সৎ। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করবে। ভালোবাসা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হৃদয় জয় করবে। সেরকম ছাত্রলীগ আমরা দেখতে চাই।

আপনাদের মেধা, কমিউনিটির দক্ষতা, সামাজিক সাংস্কৃতিক গুণাবলী ও মানবিক গুণাবলীর কারণে শিক্ষার্থীরা আপনাদের অনুসরণ করবে সেই লক্ষ্যে এই কর্মীসভা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অডিটোরিয়াম মাঠে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার কর্মীসভায় এসব বলেন তিনি। সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যাতে সাধারণ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা জানে ছাত্রলীগ মানে যে তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে একটি সংগঠন রয়েছে সেটি হলো ছাত্রলীগ।

ছাত্র লীগের এই নেতা বলেন, কর্মীসভা করা শুধু সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা একটি কমিটি গঠন করা নয়। ছাত্রলীগের একজন কর্মী হওয়া মানে একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনা করার সক্ষমতা অর্জন করা। আমরা ঠাকুরগাঁওয়ের তারুণ্যের কাছে এটি চাই। ছাত্র রাজনীতির প্রাণ কেন্দ্র হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শক্তিশালী করতে হবে।

নেতাকর্মীদের আত্মসমালোচনা দূর করার কথা বলে তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনও আমরা ছাত্রলীগকে সেরকম শক্তিশালী করতে পারিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যেতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ভর করেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। ছাত্রলীগের যে স্বতন্ত্র সক্রিয়তা রয়েছ, সেই স্বতন্ত্র সক্রিয়তা ও সংগঠনের নিজস্ব শক্তি নেতাকর্মীদের বজায় রাখার মতো ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা গ্রহণ করতে হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ের স্মৃতিচারণ করে সাদ্দাম বলেন, আমার বাড়ি পঞ্চগড় হলেও ঠাকুরগাঁও আমার সেকেন্ড হোমটাউন। এখানে আমি বড় হয়েছি। এই শহরটি আমাকে ভালোবাসতে, শৃজনশীলতার শক্তিতে উজ্জ্বীবিত হওয়ার পথ দেখিয়েছে এবং রাজনৈতিক গুণাবলি অর্জন করতে শিখিয়েছে। নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করা ও মুক্তিযুদ্ধকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবাসা। জাতির পিতার আদর্শে উজ্জ্বীবিত হওয়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁও শহরের মাটি আলো-বাতাশ ও ধুলিকণা আমার পথ চলায় ভূমিকা রেখেছে। সে কারণে ঠাকুরগাঁও শহরের কাছে আমার আজন্মের ঋণ আছে। এখানে একটি মডেল আদর্শ ছাত্রলীগ তৈরি ‍করব। যার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে সেই ঋণের কিছুটা হলেও পরিশোধ করার চেষ্টা আমি সারা জীবন করে যাব।

নির্বাচনসহ সাংগঠনিক কারণে দীর্ঘদিন ঠাকরগাঁওয়ের কমিটি গঠন ব্যহত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও ‍বলেন, এবার যেন আমরা সবার মতামত নিয়ে ও যাচাই বাছাই করে একটি কমিটি করতে পারি সে জন্য কর্মীসভা করা হচ্ছে। যেন আমরা একটি স্মার্ট মডেল ও আদর্শ কমিটি উপহার দিতে পারি।

তাই সবার প্রতি নির্দেশনার কথা হিসেবে তিনি বলেন, সংগঠনের নীতি আদর্শ সকল নেতাকর্মীদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক নানা সমস্যা সমাধানসহ সামাজিক কল্যাণে এবং বাল্য বিয়ের বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূল্যবোধ, জাতির পিতার আদর্শ, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব ও সাফল্যের বিষয়ে তাদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সকল শিক্ষার্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নাও হতে পারে। অনেকে ছাত্রলীগকে ভালো নাও বাসতে পারে। কেউ রাজনীতি করুক বা না করুক। ছাত্রলীগ করুক বা না করুক। সবাই যেন মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবাসে। লাখো শহীদের রক্তের চেতনায় নিজেকে গড়ে তোলে। সবাই যেন জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে নিজেকে গড়ে তোলে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখাকে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার নির্দেশ দেন তিনি।

এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহবুবুর রহমান বাবলু, সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি সানোয়ার পারভেজ পুলকসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারুল ইসলাম সরকার, জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দেবশীষ দত্ত সমীরসহ জেলা ছাত্রী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।