ভয়াবহ বন্যায় ফুঁসে উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল ও নদ-নদী দিয়ে তীব্র বেগে ভারত থেকে ধয়ে আসছে পানি।
বন্যায় এ বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন সেবা সংস্থার মাধ্যমে অর্থ সহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসছেন মানুষ। এরমধ্যেই অনেকে জানতে চেয়েছেন, বানভাসী মানুষদের জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে কি না?
জনপ্রিয় বক্তা ও ইসলামি ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ্ বন্যা দুর্গত মানুষদের জাকাতের টাকা দেওয়া নিয়ে বলেন, বন্যাকবলিত বা যে কোনো বিপদে নিপতিত মানুষকে জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে, যদি তারা জাকাতের টাকা নেওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়।
শায়খ আহমাদুল্লাহ্ আরও বলেন, এ দুর্যোগের মুহূর্তে অনেকে জাকাত দেওয়ার উপযুক্ত ছিলেন, কিন্তু তার সহায় সম্পত্তি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন আর জাকাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তাদেরও জাকাত দেওয়া যাবে। মোট কথা, জাকাতের গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিকেই জাকাত দিতে হবে। না হয় জাকাত আদায় হবে না।
জাকাত সম্পর্কে হাদিসে বলা আছে, যে দরিদ্র ব্যক্তির কাছে অতি সামান্য সম্পদ রয়েছে, অথবা কিছুই নেই, এমনকি একদিনের খোরাকিও নেই এমন লোক শরীয়তের দৃষ্টিতে গরিব। তাকে জাকাত দেওয়া যাবে।
অপরদিকে যে ব্যক্তির কাছে জাকাতযোগ্য সম্পদ অর্থাৎ সোনা-রূপা, টাকা-পয়সা, বাণিজ্যদ্রব্য ইত্যাদি নিসাব পরিমাণ আছে সে শরীয়তের দৃষ্টিতে ধনী। তাকে জাকাত দেওয়া যাবে না।
জাকাত সম্পর্কে হাদিসে আরও উল্লেখ আছে, জাকাত আদায় হওয়ার জন্য শর্ত হল, উপযুক্ত ব্যক্তিকে সম্পদ বা অর্থের মালিক বানিয়ে দেওয়া। যাতে সে নিজের খুশি মতো তার প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। এরূপ না করে যদি জাকাতদাতা নিজের খুশি মতো দরিদ্র লোকটির কোনো প্রয়োজনে টাকাটি খরচ করে যেমন, তার ঘর সংস্কার করে দিল, টয়লেট স্থাপন করে দিল কিংবা পানি বা বিদ্যুতের ব্যবস্থা করল তাহলে জাকাত আদায় হবে না। (রদ্দুল মুহতার ২/২৫৭)
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তির কাছে জাকাতযোগ্য সম্পদ নিসাব পরিমাণ নেই, কিন্তু অন্য ধরনের সম্পদ যাতে জাকাত আসে না যেমন ঘরের আসবাবপত্র, পরিধেয় বস্ত্র, জুতা, গার্হস্থসামগ্রী ইত্যাদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং নিসাব পরিমাণ আছে তাকেও জাকাত দেওয়া যাবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭১৫৬)
মোটকথা, জাকাতের টাকা এর হক্বদারকেই দিতে হবে। অন্য কোনো ভালো খাতে ব্যয় করলেও জাকাত আদায় হবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদিস)
উল্লেখ্য, দেশের নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরের ছাউনি ও সমতলে কোমর সমান পানি ওঠায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ। বন্যায় ১০ জেলার মানুষ ভয়াবহ আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, নোয়াখালীর আট উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা, রাঙামাটির সাজেক, কুমিল্লা, ফেনী, মৌলভীবাজারের দুটি উপজেলা, চট্টগ্রামের মিরসরাই, চাঁদপুর, সিলেট ও হবিগঞ্জে এ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |