ভারত মহাসাগরে প্রায় ৫০ জলদস্যু বাংলাদেশের পতাকাবাহী ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জিম্মি করে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাইকে জিম্মি করে রেখেছে। ভয় দেখাতে ছুড়ছে একের পর এক গুলি।
জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীর কাছে একটি অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি জানান, মুক্তিপণ না দিলে সবাইকে এক এক করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে দস্যুরা।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) প্রথম রোজার ইফতারের পর স্বামীর পাঠানো এই মেসেজ পেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন আতিক উল্লাহ খানের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আতিক উল্লাহ খানের মা শাহনুর বেগম বলেন, ‘আমরা যখন ইফতার করছিলাম, এর মাঝেই আমার ছেলে ভয়েস মেসেজে জানায়, তাদের সবার মোবাইল নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জাহাজটি সোমালিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, “কিছুক্ষণ পর তার স্ত্রীকে পাঠানো মেসেজে জলদস্যুরা টাকা দাবি করেছে বলে জানায়, না হলে ওদের মেরে ফেলবে। বিষয়টা সবাইকে জানাতে বলেছে সে। এটা শোনার পর থেকে আতিকের স্ত্রী বারবার বেহুশ হয়ে যাচ্ছে। সে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আরও তিনটা মেয়ে আছে। মেয়েরা বারবার এসে জানতে চাইছে, কান্নাকাটি করছে, ‘আমাদের বাবা কোথায়’ বলে।”
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে আতিক তার স্ত্রী মিনাকে বলছিলেন, ‘কয়েক দিন আমাকে ফোনে পাবে না। আমি নেটওয়ার্কের বাইরে থাকবো।’
জিম্মি নাবিক আতিকের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায়। মা, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি থাকতেন শহরের নন্দনকানন এলাকায়।
আতিক উল্লাহ খানের বন্ধু জুলকার নাইম বলেন, ‘বিকেল (মঙ্গলবার) সাড়ে ৪টার দিকে আমাকে ভয়েস মেসেজ পাঠায় আতিক। সে বলে, ‘দোয়া করিস, পরিবারকে দেখাশোনা করিস।’ ওই এক মিনিটই কথা হয়েছে। ওয়াসরুম থেকে এ কথাগুলো বলেছিল সে। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।’
এদিকে সোমালিয়ান জলদস্যুরা জাহাজে ওঠার পর কার সঙ্গে কী আচরণ করেছে সেই বর্ণনাও দিয়েছেন আতিক। অডিও বার্তার শুরুতেই সালাম দিয়ে তার নাম বলেন। জানান, সাড়ে ১০টার সময় একটা হাইস্পিড বোট জাহাজের দিকে আসতে দেখে এলার্ম বাজানো হয়। সহায়তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিলেও তারা রিসিভ করেনি। এর মধ্যে জলদস্যু চলে আসে।
জাহাজে উঠেই দস্যুরা ক্যাপ্টেন ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে। এরপর সবাইকে একসঙ্গে করে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেকেন্ড অফিসারকে হালকা মারধর করেছে তবে আর কারও গায়ে হাত তোলেনি তারা।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |