সারাদেশ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হয়ে গেছে। তাই বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়িতে দেওয়া বিভিন্ন উপহারসামগ্রী স্বামীর কাছ থেকে বুঝে নিচ্ছেন স্ত্রী। পরিবারের সদস্যরা তালিকা করে মিলিয়ে নেন তাদের দেওয়া জিনিসপত্র। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ দৃশ্য দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই পরিবারের উপস্থিতিতে তালিকা ধরে বিছানার চাদর, লেপ, তোশক, কাঁথা-বালিশ, খাট, ড্রেসিং টেবিল, হাঁড়িপাতিল, বিভিন্ন কৌটা, চিনি, লবণ, মসুর ডাল, বঁটি, গ্যাসের চুলা, কাপ-পিরিচ,পানির কলসি, রাইস কুকার, প্রেশার কুকারসহ বিভিন্ন জিনিস বুঝে নিচ্ছে।
জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনীর কসবা গ্রামের মোছা. টুকটুকি খাতুনের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কূলতাডাঙ্গা গ্রামের মো. লিংকনের প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয়। নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তাদের তালাক হয়ে যায়। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ ও নারী নির্যাতন আইনে দুটি মামলা করেন টুকটুকি খাতুন। আদালত তাদের আইনজীবীদের বিষয়টি মীমাংসার নির্দেশ দেন। কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ায় ছেলের পরিবার বিভিন্ন উপহার মেয়ের পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়। ছেলেপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল কালবেলাকে বলেন, আমরা মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে দেখতে পাই, তালাকের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়ের থেকে বাবা-মায়ের ভূমিকা বেশি থাকে। এগুলো বেশি দেখা যায় গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের অভিভাবকের ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, তালাকের মামলায় ছেলে বা মেয়ে একটি পক্ষ জিতে যায়। তালাক হওয়ায় অনেক সময় উভয়পক্ষই ভাবেন, তারা জিতে গেছেন। কিন্তু দিনশেষে হেরে যায় তাদের সন্তানরা। এই মামলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। আইনজীবী আরও বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা সম্পর্ক রাখতে রাজি হয়নি। কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ার ফলাফল এ তালাক। যেটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঘটেছে। মেহেরপুর গাংনী ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘তালিকা করে মালামাল ফেরত দেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। দিন দিন তালাক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সম্প্রতি কালবেলা অনলাইনে ‘মেহেরপুরে প্রতি ৫ ঘন্টায় ১ তালাক’ শীর্ষক সংবাদ এবং দক্ষিণের একটি জেলায় বছরে বিয়ে ২১শ, তালাক ১৯’ শিরোনামে ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ প্রতিবেদনে ব্যাপক তোলপাড় ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ বিষয় নিয়ে কালবেলার অনুসন্ধান চলমান আছে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |