অপরাধ: প্রেমের পরিণয় বিয়ে। মেনে নিতে পারেনি কনের পরিবার। অতঃপর তালাক। বাধে দুই পরিবারে বিরোধ। মারধরের শিকার হন কনের বাবা। থানায় হয় মামলা, আসামি ধরতে যায় পুলিশ। শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে মারা গেলেন প্রেমিকের স্বজন।
ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের। প্রেমের বিয়েকে কেন্দ্র করে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে সিদ্দিক মোল্লা (৮০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। সোমবার (৪ নভেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত সিদ্দিক মোল্লা সোনাতলা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে। এ ঘটনায় আবদুন নূর (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে সাব্বির মিয়া, রহিম মিয়া, মিজান মিয়া, সবুজ মিয়া, অবিদ মিয়া, খলিল মিয়া, জামাল মিয়া, সাহাজুল মিয়া, মামুন মিয়া, তফাজ্জল মিয়া, নায়েম মিয়া, নাজমুল মিয়া, তালিম মিয়া, শারমীন বেগম, রাফিয়া বেগম, আক্কল আলী, সাইফুল, সফিক স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে হয়ে যাওয়া সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ লিখিত অভিযোগ আসেনি বলে জানান ওসি।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, গোয়ালনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ও সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা সালাম মিয়ার কন্যা শাহীনুর বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের সাইফুল মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছরের ৭ মে শাহীনুর ও সাইফুল পালিয়ে বিয়ে করেন। শাহীনূরের বাবা বিয়ে মেনে নেননি। বিয়ের কয়েক মাস পর সাইফুলকে ডিভোর্স দেন শাহীনূর। এতে দুই পরিবারের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
শাহীনূরের বাবা সালাম মিয়া ২৫ অক্টোবর গ্রামের একটি সালিশ সভা শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে সাইফুল ও তার পক্ষের লোকজন মারধর করে বলে নাসিরনগর থানায় একটি মামলা করা হয়। ওই মামলার আসামি সোমবার রাত ২টার দিকে সোনাতলা গ্রামে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে টের পেয়ে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে সাইফুলের দাদা সিদ্দিক মোল্লাসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিদ্দিক মোল্লাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে সালাম মিয়ার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর হয়।
সাইফুল মিয়া অভিযোগ করেন, শাহীনূরকে ডিভোর্স দেওয়া বাধ্য করে তার বাবাসহ পরিবার। পরে থানায় একটি মিথ্যা মামলা করে। পুলিশ আসামি ধরতে এলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তবে সালাম মিয়া জানান, সাইফুল তার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করেন। সম্প্রতি তাকেও মারধর করা হলে থানায় মামলা করেন। সোমবার রাতে আসামি ধরতে এলে পালানো সময় একজন আহত হন। পরে তাকে নিজেদের লোকজনই মেরে ফেলে।
চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এস. আই) মো. জাকির হোসেন জানান, আসামি ধরতে যাওয়ার খবরে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আহত সিদ্দিক মোল্লাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |