অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কারের আগেই সবাই যদি বলে নির্বাচন দিয়ে দেন, দিয়ে দিবো। আমরা কে এটাকে বাধা দেওয়ার! সবাই সংস্কার চেয়েছে, সেটা করতে হলে সময় দিতে হবে। সময় দিলে হবে, না দিলে নির্বাচন করে দিবো।
একটা নির্বাচন করতে কতদিন সময় লাগে? ৯০ দিন। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হ্যাঁ, সংবিধানে সেটা বলা আছে। সেই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাবে। ওখানেই যদি রাজনৈতিক দলগুলো বলে এবার নির্বাচন দিয়ে দেন, দিয়ে দেবো। আমরা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না।
সংস্কারের দায়িত্ব আপনার কাছে। এবার ড. ইউনূস বলেন, আমি সংস্কারের জন্য তাদের কাছে অনুরোধ করছি। বলছি, একটা সুযোগ আছে, এটা আপনারা ব্যবহার করেন। আজ যদি সব রাজনৈতিক দল বলে যে সংস্কার দরকার নেই, নির্বাচন দিয়ে দেন; তাহলে আমি কে তাদের এই সংস্কার করার?
ডেইলি স্টার: বাস্তবতা হলো, বড় দল বলতে আছে বিএনপি, তারপরে জামায়েত আছে, আরও ছোট ছোট কয়েকটি দল আছে। এই দলগুলো যদি আপনাকে বলে যে সংস্কার দরকার নেই, নির্বাচন দিয়ে দেন? এর উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, দিয়ে দেবো।
এই দলগুলোর বাইরেও অনেক জনগণ আছে। তাদের মতটা আপনি কীভাবে নেবেন? এই নতুন আরেকটি প্রশ্ন এলো, আরেকটি প্যাচের মধ্যে ফেললেন আমাদের। এটারই সামাল দিতে পারছি না, আবার নতুন হিসাব। এটার জন্য আবার গণভোট লাগবে তাহলে। জনগণ নয়, শুধু রাজনৈতিক দল। আমরা জনগণ পর্যন্ত যেতে পারব বলে মনে হয় না। আবার গণভোটে যেতে হবে। সেটা জটিল। শুধু রাজনৈতিক দলের মতামত নিচ্ছি। এটা পরিষ্কার।
আলোচনায় আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে আপনার কোনো চিন্তা আছে? ড. ইউনূস বলেন, আমরা নিজেরা এটা চাপাবো না। বিএনপি বলেছে, অবশ্যই তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আমরা ধরে নিলাম এটাই তাদের মত।
দেশের অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন যে ‘দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুব খারাপ’। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আপনি বলেছেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে একটা মজবুত অর্থনীতি রেখে যেতে পারবেন? কীভাবে তা সম্ভব করবেন, উদ্যোগগুলো কী কী?
দেশের অর্থনীতির ব্যাপোরে ড. ইউনূস বলেন, ব্যাংকিং সিস্টেম ঠিক করছি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঠিক করছি, ব্যবসা-বাণিজ্য-রপ্তানি ঠিক করছি- এর মাধ্যমেই সেটা হবে।
নির্বাচনের প্রশ্নে আবার যদি ফিরে যাই, সংস্কার যত তাড়াতাড়ি হবে নির্বাচন তত তাড়াতাড়ি হবে।
ড. ইউনূস বলেন, আর যদি রাজনৈতিক দলগুলো বলে সংস্কার লাগবে না, তাহলেও তাড়াতাড়ি নির্বাচন হবে। আর সংস্কার লাগবে কী না, সেটাও রাজনৈতিক দলগুলোকে বলতে হবে। তাদেরকে বারবার বলছি, এটা তোমাদের জিনিস। আমরা শুধু ফ্যাসিলিটেটর, আমরা কোনো শাসক না। এই সময়টা কাটাচ্ছি, যাতে শান্তিতে লোকজন থাকে, জিনিসটা গুছিয়ে আনি। নির্বাচন কীভাবে হবে, কার জন্য হবে, কীভাবে হবে, সেটা ঠিক করে দেবো।
আপনার সরকারের একটি সমালোচনা আছে যে একটি গোষ্ঠীর চাপে আপনারা অনেক ক্ষেত্রে রাজি হয়ে যান-শিক্ষার্থীরা এলো, স্টাডি ছাড়াই চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো হলো। এটাও তো সরকারের এক ধরনের অস্থিরতার পরিচয়। এ বিষয়ে ড. ইউনূসের জবাব হচ্ছে, এটা সরকারের অস্থিরতা বলব না, এটা সময়ের অস্থিরতা।
তিনি বলেন, সবাই এখনই পেতে চায়। বয়স ৩৫ আন্দোলনের তাদের একটা যুক্তি ছিল। সেটার জন্য একটা কমিটি করা হয়েছিল। কমিটি ৩৫ করার সুপারিশ করলো। কিন্তু আমরা দেখলাম এটা ঠিক হবে না। নিজেদের মধ্যে অনেক বিতর্ক করে শেষ পর্যন্ত ৩২ দিলাম। সেটা নিয়ে আবার হৈচৈ হলো, তাদের বোঝানো হলো।
সূত্র: দ্য ডেইলি স্টার।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |