বাংলাদেশের একটি ক্লাবের প্রথম এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অদূরদর্শীতায়। এএফসির সহজ শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশের একটি নারী দলের জায়গা হতে পারতো এশিয়ান ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে। তাতে বড় সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের। তবে ভুটানের ক্লাব রয়্যাল থিম্পু কলেজ বাংলাদেশের চার নারী ফুটবলারের সামনে খুলে দিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দরজা। সম্প্রতি ভুটানের বিপক্ষে দু’টি প্রীতি ম্যাচ খেলে আসা বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, সহ-অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা, মিডফিল্ডার মনিকা চাকমা ও ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমাকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য দলে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ক্লাবটি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও আনুষ্ঠানিক সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে।
এএফসি প্রথমবারের মতো আয়োজন করছে ওমেন্স চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। প্রথম আসর বলেই অনেক কিছুতেই ছাড় দেওয়া হয়েছিল এবার। ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের শর্ত পূরণেও দেওয়া হয়েছিল ছাড়। অথচ সেই সুযোগ বাংলাদেশের কোন ক্লাবকে দেয়নি বাফুফে। এ বছর লিগের আগে আসা এই প্রস্তাবে চাইলেই আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের নাম পাঠাতে পারতো বাফুফে। তবে বিষয়টি তারা পুরোপুরি চেপে যায়। ফলে এশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাবগুলোর সঙ্গে খেলার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের।
তবে প্রিলিমিনারিপর্বে খেলতে যাওয়া রয়্যাল থিম্পু কলেজ বাংলাদেশের চার ফুটবলারকে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘ভুটানের রয়্যাল থিম্পু কলেজ একটা চিঠি দিয়েছে। তারা আমাদের চারজন ফুটবলারকে চাচ্ছেন। প্রথমে চিন্তা করেছিলাম দিবো না, যেহেতু সামনে আমাদের সাফের প্রস্তুতি আছে। পরে দেখলাম যে দলটা এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। তাই চারজনকে আমরা অনুমতি দিয়েছি খেলার। ১০ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট ওদের সঙ্গে চুক্তি তিন সপ্তাহের। যেহেতু এসিএল-এ ওরা অনেক শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাবে, যা সাফে কাজে লাগবে। সাফ যেহেতু অক্টোবরে। ওরা খেলে আসার পর যোগ দিবে আরও ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে। তবে তাদের বলেছি যাতে ঝুকিমুক্ত হয়ে খেলে। কারণ সেখানে চোট পেলে সাফের আগে রিকভারির সময় থাকবে না।’
ভুটানের ক্লাবের হয়ে এসিএল খেলার সুযোগ পাওয়ায় ভীষণ খুশি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। এমনিতে বিদেশের দলে নিয়মিতই খেলেন সাবিনা। তবে এসিএল-এর মতো আসরে খেলাটাকে আলাদা করেই রাখলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা গোলদাতা, ‘মেয়েদের জন্য এটা অনেক বড় পাওয়া। গেলো কয়েক বছর ধরেই শুনছিলাম, মেয়েদের ক্লাবের এএফসি’র টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ হবে। তবে হব হব করেই শেষ তিন মৌসুমে হয়নি। দেশের কোন ক্লাবের হয়ে যেহেতু হলো না, বিদেশের ক্লাব ভুটানের ক্লাবের হয়ে খেলবো এটাও ভালো। আমি মনে করি সাফের আগে দু’টি ম্যাচ যদি ভালো দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ খেলে আসি, সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। পাশাপাশি আমার মনে হয়, বাকী যারা যাবে, তাদের ক্যারিয়ারের একটা মাইলফলক হবে যে তারা বিদেশের মাটিতে খেলার সুযোগ পেয়েছে। এটা ওদের জন্য আরও বড় অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে। এটা দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে। সেখানে গিয়ে দু’টি ভালো ম্যাচ খেলে আসার প্রত্যাশা থাকবে।’
প্রিলিমিনারি রাউন্ডে রয়্যাল থিম্পু কলেজ ডি গ্রুপে অংশ নিবে। ২৫ আগস্ট তারা ইরানের বাম খাতুন এফসি’র বিপক্ষে খেলতে প্রথম ম্যাচ। ২৮ আগস্ট হংকংয়ের কিচি এফসি’র বিপক্ষে তাদের গ্রুপের শেষ ম্যাচ। প্রিলিমিনারি রাউন্ডের চার গ্রুপের সেরা চার দল যাবে পরের ধাপে।
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দল হওয়া সত্যেও বাংলাদেশের কোন ক্লাব নেই প্রথম এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। এটা যেমন বড় একটা আক্ষেপ, ঠিক তেমনই চার ফুটবলারের রয়্যাল থিম্পু কলেজের হয়ে সেখানে খেলার সুযোগ পাওয়াটাও নারী ফুটবলের জন্য বড় সুসংবাদ।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |