দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে দুদক। দুর্নীতির ব্যাপকতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম, কোনও গণঅভ্যুত্থানের পর গণরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে (বায়তুল মোকাররম) মসজিদের ইমাম পর্যন্ত পালিয়ে গেছেন। ছাত্রজনতা সেটা করে দেখিয়েছে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরও তথ্য পেলে সাংবাদিকদের জানানো হবে।’
গত ১১ ডিসেম্বর দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ রোববার বিকেলে প্রথম গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা। মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদকের গতি বেড়েছে এটা আপনারাই লিখেছেন। রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। সেই দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও লুকোচুরি করবো না। সময় মতো সব কিছুই সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হবে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা থাকেন তাদের ধরা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার জনপ্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে। সেই প্রত্যাশা পূরণে দুদক কাজ করে যাবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মোকাবিলা করার সৎ-সাহস আমাদের আছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ মামলা করার পর সত্য উদঘাটন করে। আর দুদক সত্য উদঘাটনের পর মামলা করে। সে কারণে দুদকের মামলাগুলো যাতে জনপ্রত্যাশার পক্ষে যায়, সেটাই সবাই আশা করি।’
নিজের সম্পত্তির ফিরিস্তি দিলেন দুদক চেয়ারম্যান
বসিলায় সাড়ে সাতশো স্কয়ার ফিটের দুটি মিলিয়ে ১৫০০ স্কয়ার ফিটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। সেখানে আরও ৭০০ স্কয়ার ফিট নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। পূর্বাচল আমেরিকান সিটিতে স্ত্রীর সঙ্গে আমার একটি খালি জায়গা আছে পাঁচ কাঠা। বিসিএস প্রশাসন কমিটির সদস্য ছিলাম। সেখানে আটজন সদস্যের জন্য ১০ কাঠা জমি আছে। আমার ভাগে ১ দশমিক ২৫ কাঠা পড়বে। ২০০৭ সালে টাকা-পয়সা পেয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত দখল পাইনি।
তিনি আরও বলেন, রাজউকের একটি প্লটের জন্য ৭৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত সেটির কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। যে কোনো কারণে হোক সরকার আমাকে দেয়নি। আমি আবার আবেদন করবো। এর বাইরে আমার আর কোনো স্থাবর সম্পদ নেই।
অস্থাবর সম্পদের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বিভিন্ন আকারের ২৫টি সেলফ ভর্তি বইপত্র আছে। অনেক দামি বইপত্র আছে। আসবাবপত্র ইলেকট্রনিক সামগ্রী মিলিয়ে পাঁচ লাখ টাকার জিনিস আছে। পাঁচ বছর মেয়াদি ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আছে। আর তিন মাস অন্তর সঞ্চয়পত্র আছে ২০ লাখ টাকার। আমার জিপিএফের টাকা আমি তুলি নাই, ওখানে ১৭ লাখ টাকা আছে।
নিজের আয়ের উৎস সম্পর্কে জানিয়ে তিনি বলেন, আমার চাকরিলব্ধ আয়- উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের বিক্রয়লব্ধ অর্থ। শিক্ষকতা করি, বক্তৃতা করি, লেখালেখি করি। সাড়ে পাঁচ শতক একটা জমি কিনেছিলাম বেড়িবাঁধের বাইরে, সেটি বিক্রি করে কিছু টাকা পেয়েছিলাম।
কমিশনের অপর দুই সদস্য সাবেক জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিনসহ দুদকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |