
২০২৪ এর ভূয়া নির্বাচনের পর খুব মন খারাপ করে থাকতাম। এমন সময় আখতার একদিন আইন বিভাগে এলো। বলে কয়ে আমি তাকে বাড়ী থেকে ঢাকায় আনিয়ে মাষ্টার্স শেষ করতে রাজী করিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরও ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার কোন লক্ষণ নাই তারমধ্যে।
আমার গাড়ী থামিয়ে সে সালাম দিলো। তারপর বেশ কিছুক্ষন কাঁচুঁমাচু করে দাড়িয়ে রইলো। আমি বিরক্ত হলাম। আরো বিরক্ত হলাম যখন সে বলল, নুর-রাশেদদের দল ত্যাগ করে নতুন সংগঠন করবে!
আমি বললাম: আবার নতুন দল! আর কতোবার মার খেতে চাও তুমি!
সে মাথা নীচু করে মৃদু হাসতে থাকে। এই অদ্ভূত হাসির কোন মানে খুজে পেলাম না। বেশী কথা না বলে বাসায় চলে এলাম। কয়েকদিন পর ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে তার রক্তাক্ত ছবি দেখে দু:খ আর হতাশায় বুক বিদীর্ণ হলো। সে কি বুঝতে পারছে না কিছু হবে না আর এসব করে!
বুঝতে আমি-ই পারিনি। নতুন সংগঠন করার কয়েকমাসের মাথায় তারা এক অসম্ভবকে সম্ভব করলো। প্রবল প্রতাপশালী আর নির্মম ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটালো।
আখতারের সংগঠনের নাহিদ হয়ে উঠলো এই গণঅভূত্থানের প্রধান নেতা। উত্তাল জুলাই-এ আমার এবং আমার মতো লক্ষ মানুষের নেতা! তারপর নাহিদের সাথে কাজ করলাম নতুন সরকারে। কতোবার যে সে আমাকে বিস্মিত করলো তার যোগ্যতা, বাকসংযম, ব্যক্তিত্ব আর অকল্পনীয় ম্যাচিউরিটি দিয়ে!
নাহিদ থাকে আমার পাশের বাসায়। সে সরকার থেকে পদত্যাগ করার দিন গভীর রাতে তার সবুজ লনের দিকে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। মায়া বড় বিচিত্র বিষয়!
নাহিদ আর আখতার শুরু করছে নতুন যাত্রা।
আখতার হোসেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, যিনি বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, যেখান থেকে নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম তৈরি হয়েছিলো। যারা ২০২৪ সালের ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব প্রদান করে।
লেখক : অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক ও আইন উপদেষ্টা ।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |