প্রচ্ছদ সারাদেশ ভাইরাল হওয়ার নেশায় ‘মৃত্যুও’ অবিশ্বাস্য — বর্ষা চৌধুরী বিতর্কে সামাজিক প্রশ্ন

ভাইরাল হওয়ার নেশায় ‘মৃত্যুও’ অবিশ্বাস্য — বর্ষা চৌধুরী বিতর্কে সামাজিক প্রশ্ন

আলোচিত ফ্যাশন উদ্যোক্তা বর্ষা চৌধুরীর মৃত্যু সংক্রান্ত গুজবের বিপরীতে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন সমাজকর্মী রুবায়েত ফাতেমা তন্নি। তিনি বলেছেন, “বর্ষা মারা যায়নি, সে অসুস্থ। মিথ্যা নিউজ ছড়ানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।” সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তন্নি বলেন, “একজন জীবিত মানুষকে মৃত ঘোষণা করে বিভ্রান্তি ছড়ানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ। বর্ষা মানসিকভাবে কিছু সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন — এর সমাধান গুজব নয়, সহানুভূতি।”

তিনি আরও বলেন, “আমি চাই বর্ষা আবার সুস্থভাবে জীবনে ফিরে আসুক। যদি সে আমাকে সেই সুযোগ দেয়, আমি তার কাউন্সেলিং ও মানসিক সাপোর্টের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।” রুবায়েত ফাতেমা তন্নির এই মানবিক অবস্থান ইতোমধ্যেই অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি সমাজের প্রতি আহ্বান জানান যেন, কেউ গুজব না ছড়িয়ে বরং বর্ষার পাশে দাঁড়ায় এবং তার সুস্থতা কামনা করে। প্রসঙ্গত, বর্ষা চৌধুরী ‘বর্ষা লাইফস্টাইল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় একজন উদ্যোক্তা।

অন্যদিকে, বর্ষা চৌধুরীর মৃত্যু সংক্রান্ত গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সমাজকর্মী বারিশ হক। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, বর্ষার পরিবার নিশ্চিত করেছে—তিনি মারা যাননি। বারিশ হক লিখেছেন, “বর্ষা চৌধুরীর পরিবারের সাথে কথা হয়েছে, উনি নাকি মারা যান নাই। উনার ফেইসবুক পেইজ থেকে কে পোস্ট করেছে কেউ বলতে পারছে না। এটা কোন কথা!”

তিনি এই বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কারো ফেসবুক আইডি থেকে এমন সংবেদনশীল পোস্ট কীভাবে এলো, আর সেটি পরিবারও জানে না—এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” ঘটনাটিকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও বিভ্রান্তি। অনেকেই বর্ষার সুস্থতা নিয়ে দোয়া জানালেও, অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—এ ধরনের পোস্ট কারা এবং কী উদ্দেশ্যে করেছেন? বারিশ হক আহ্বান জানান, বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে এবং প্রকৃত তথ্য না জেনে গুজবে কান না দিতে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ‘Borsha’s Lifestyle’-এর উদ্যোক্তা বর্ষা চৌধুরী। সম্প্রতি তার মৃত্যুর গুজব ঘিরে দেখা গেছে অদ্ভুত এক চিত্র — কেউ দুঃখ প্রকাশ করছেন, আবার কেউ ঠাট্টা-তামাশা ও ট্রলে মেতে উঠেছেন। এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে একজন মানুষের মৃত্যুর খবরেও মানুষ হাসছে — কারণ, বহু নাটকীয়তা ও বারবার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তিনি নিজেই তৈরি করে ফেলেছেন একটি ‘অবিশ্বাসযোগ্য বাস্তবতা’।

একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লেখেন:
“আহারে বেচারি Borsha’s Lifestyle আপু! ভাইরাল হওয়ার নেশায় নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, যেখানে মৃত্যুর খবরেও মানুষ হেসে ফেলছে! এটা শুধু একজন ব্যক্তির জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি মেসেজ। আবারও প্রমাণ হলো, পাপ বাপকেও ছাড়ে না!”

লেখাটি আরও বলে:
“এমন জীবন গঠন করো না, যাতে মৃত্যুর খবর শুনেও মানুষ বলে—‘এটাও হয়তো নাটক!’ কিছুদিন আগেই লাইভে আত্মহত্যার নাটক, বারবার বিয়ের গুঞ্জন, হিজাব-পর্দার ঘোষণা দিয়ে আবার নাচানাচি—সব মিলিয়ে মানুষ আজ ক্লান্ত।”

সেই পোস্টে শেষ বাণী ছিল আরও শক্তিশালী:
“যদি সত্যি মারা গিয়ে থাকেন, আল্লাহ যেন সব পাপ ক্ষমা করে দেন। আর যদি এটাও নাটক হয়ে থাকে — তাহলে বলার কিছু নেই।”

সামাজিক বাস্তবতা ও নৈতিকতার দিক দিয়ে এই ঘটনাটি একটি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে — আমরা কীভাবে এমন সমাজে পৌঁছালাম যেখানে কারও মৃত্যু নিয়েও ট্রল হয়, আর মানুষ মমতা হারিয়ে ফেলে?

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।