বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। যার ফলে কৃষিকাজ থেকে শুরু করে অনেক খাতই পানির উপর নির্ভরশীল। তবে নদীর পানির এই নির্ভরশীলতাকেই কাজে লাগিয়ে অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশকে ভোগান্তিতে রেখে আসছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এক ফারক্কা বাধের কারণে দেশের অনেক নদী এখন মৃতপ্রায়।
অনেকদিনের জরিপ শেষে ১৯৫৪ সালে জিকে সেচ প্রকল্প অনুমোদন পায় যা পরবর্তীতে চালু হয়েছিল ১৯৬২ সালের দিকে। ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালের মাধ্যমে এই সেচ প্রকল্পের পানি কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার ১৩টি উপজেলায় সরবরাহ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় সেচযোগ্য এলাকা রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ১০৭ হেক্টর। এই জিকে সেচ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য একটি আশীর্বাদ। তবে ধীরে ধীরে প্রকল্পের একাধিক পাম্প বন্ধ হতে থাকে। কখনো পানির অভাবে আবার কখনো যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান দুটি পাম্প অচল রয়েছে। যার ফলে সেচযোগ্য সকল পানির সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে হচ্ছিলো না।
এতোদিন একটি পাম্পের উপর নির্ভর করেই পদ্মা নদী থেকে খালের মাধ্যমে পানি এনে পাম্প মেশিনে পানি তুলে সেচ প্রল্পের ক্যানেলে সরবরাহ করা হয়। আর প্রতিবছরই জানুয়ারি মাসজুড়ে সেচ প্রকল্পের পানির উপর কৃষকদের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। কেননা, এই সময়টি বোরো ধান আবাদের মৌসুম।
তবে এবার পদ্মায় পানির লেভেল কম থাকায় জিকে প্রকল্পের ইনটেক ক্যানেলে পানি ঢুকছে না। যার ফলে পাম্প দিয়ে পানি তুলে তা কৃষকদের জন্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় পানির অভাবে বোরো ধান চাষীদের মাথায় হাত।
এদিকে নির্মাণ কাজ শেষ করে ১৯৭৫ সালে ভারতের ফারাক্কাবাধ চালু হয়। যা তখন কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। সেই থেকেই গঙ্গা নদীতে ভারতের ফারাক্কা বাধ একতরফা পানি প্রত্যাহার করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ্মা নদীসহ আরো অনেক নদীর পানি কমিয়ে দেয়। যার ফলে এসব নদীর বেশিরভাগই আজকে মৃতপ্রায়। এই বাধ নিয়ে একাধিক চুক্তি হলেও ভারত ভারত এখনও বাংলাদেশকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করেনি। যার ফলে আজকে বাংলাদেশের একাধিক র্কষকরা পানির অভাবে নিজেদের কৃষিকাজ চালাতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
ফারাক্কা বাধ ছাড়াও বাংলাদেশের নদী দখল, সেচ প্রকল্পের ক্যানেল খননকাজ বন্ধসহ আরও বিভিন্ন কারণে দেশের কৃষিখাত বর্তমানে হুমকির মুখে। আর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ তা নদীমাতৃক বাংলাদেশে অনেক বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |