প্রচ্ছদ ধর্ম খুতবায় সালমান ও বিচারক মানিকের সমালোচনা করায় ইমাম বরখাস্ত

খুতবায় সালমান ও বিচারক মানিকের সমালোচনা করায় ইমাম বরখাস্ত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সমালোচনা করে জুমার খুতবায় আলোচনা করায় নড়াইলে এক ইমামকে বরখাস্তের অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি এম হেদায়েত হোসাইন নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। একই সঙ্গে উজিরপুর ইসলামিয়া নুরানি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) তাকে বরখাস্তের পর মসজিদ থেকে বাড়িতে চলে যান ইমাম মুফতি এম হেদায়েত হোসাইন।

অভিযোগ উঠেছে, নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর মসজিদ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উজিরপুর ইসলামিয়া নুরানি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানের নির্দেশে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

আনিচুর রহমান নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলুর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি এম হেদায়েত হোসাইন নড়াইল সদর উপজেলার হবখালী ইউনিয়নের কাগজীপাড়া গ্রামের আব্দুল গফফার মোল্যার ছেলে।

মুফতি এম হেদায়েত হোসাইন নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। তখন থেকেই তাকে চাপ দিতে থাকে মসজিদ কমিটির লোকজন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট মসজিদের মুসলিমদের মিষ্টিমুখ করান তিনি।

সবশেষ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জুমার খুতবায় দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিশেষত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সমালোচনা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আনিচুর রহমান।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার ইমাম হেদায়েত হোসাইনকে মসজিদ ও মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান। এরপর সকাল ১০টার দিকে মসজিদ ছেড়ে চলে যান ওই শিক্ষক।

ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি হেদায়েত হোসাইন কালবেলাকে বলেন, আমার ওপর অর্পিত ইমামতি ও মাদ্রাসার শিক্ষকতার দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করেছি। ছুটি ছাড়া একদিনও একটা ক্লাস বাদ দেইনি। নিয়মিত নামাজ পড়িয়েছি। কিন্তু বিচারক মানিক ও সালমান এফ রহমানের সমালোচনা করে জুমার খুতবায় বক্তব্য রাখায় আমাকে চাকরিচ্যুত করা হলো।

তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আহত হওয়া শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য আমি অর্থ সংগ্রহ করেছিলাম। তখন থেকেই মসজিদ কমিটির আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হই আমি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে আনিচুর রহমান বলেন, আমাদের মসজিদে চার বছর ধরে আব্দুল গাফফার নামে একজন ইমামতি করতেন। তিনি চলে যাবার পর মুফতি এম হেদায়েত হোসাইনকে ইমাম ও নুরানি মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় কমিটির সম্মতিক্রমে।

তিনি বলেন, ঈমাম হিসেবে ভালো আলোচনা করলেও নুরানি মাদ্রাসায় পাঠদানের ক্ষেত্রে অভিভাবকরা সন্তষ্ট নন। সে কারণে কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত মাসের ১৫ তারিখে ওই শিক্ষককে রাখা হবে না বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় মুসল্লী ও সাবেক কাউন্সিলর রজিবুল ইসলাম বলেন, এখানের মাদরাসার শিক্ষক যে থাকেন তিনি ওই মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাকে আগেই বিভিন্ন বিষয়ে সংশোধন হওয়ার জন্য বলা হলেও তা হননি।

তিনি বলেন, অভিভাবকদেরও অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ওই মসজিদের অধিকাংশ মুসল্লি আওয়ামী লীগ সমর্থিত, যার কারণে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনি। ইমামকে এভাবে বাদ দেওয়া ঠিক হয়নি।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।