প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে চক্রান্ত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে চক্রান্ত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

আজকের সেরা সংবাদ: এবারের নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এবার যেহেতু নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চক্রান্ত, সেকারণে নির্বাচনের পরিবেশটা যাতে সুন্দর হয়, উৎসবমুখর হয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। তিনি আরও বলেন, একটা অনুরোধ থাকবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আপনারা বজায় রাখবেন। যার যার ভোট সে চাইবেন। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেটাই মেনে নেবেন। সেভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে। বৃহস্পতিবার ছয়টি জেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে এসব জেলার সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন তিনি। ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর ও শেরপুর জেলা, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর ও বান্দরবান জেলায় নির্বাচনী জনসভা হয়।

বক্তব্যের শুরুতে বিজয়ের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়টি উল্লেখ করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের বিজয় নিয়ে এসেছে জনগণ। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা এবং ১৫ই আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তিনি। বিদেশে শরণার্থী হিসেবে থাকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি। ১৯৮১ সালে (আওয়ামী লীগের) সম্মেলনে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেন তারা। দেশে ফিরে দায়িত্ব নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করি এবং জনগণের ম্যানডেট নিয়ে ২১ বছর পর সরকারে আসি। দেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবক, জনগণের কল্যাণে কাজ করি। নিজের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, শুধু ২০০১ সালে আসতে পারিনি। আমি গ্যাস বিক্রি করবো না এ কথা বলেছিলাম বলেই। খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রি করবে, দেশের সম্পদ বিক্রি করার চক্রান্ত করেই ক্ষমতায় এসেছিল। তারা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট জয়লাভ করি আর বিএনপি জোট মাত্র ৩০টি সিট পায়। তারপর থেকেই বিএনপির কাজ হচ্ছে নির্বাচনবিরোধী কার্যক্রম। ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে ২০১৩ সাল থেকে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে। কত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখনও মানবেতর জীবনযাপন করছে। কত মানুষ স্বজনহারাদের বেদনা নিয়ে বেঁচে আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা রাজনৈতিক দল বিএনপি, সন্ত্রাসী দল। আরেকটা দল হচ্ছে জামায়াত, যুদ্ধাপরাধীর দল। এরা নির্বাচনে না আসলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। জনগণের সমাবেশ হলে, ভোটারদের আগমনে এবং ভোটারদের অংশগ্রহণে এখানে নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক আমরা সেটাই চাই। আর সন্ত্রাসী দল, ওরা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। ওদের দিয়ে দেশের কোনও কল্যাণ হবে না। দুর্নীতি করা ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। সে কারণে আমরা কিন্তু এটা (নির্বাচন) উন্মুক্ত করে দিয়েছি। নৌকা মার্কা দিয়েছি। পাশাপাশি আরও যারা দাঁড়াতে চায়, তারাও দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই মানুষ পোড়ানো আর ধ্বংস করা। নির্বাচিত সরকার, গণতান্ত্রিক সরকার ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আছে বলেই দেশ উন্নত হয়েছে। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা তো এক কদমও আগাতে পারেনি। দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল। দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসলে এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারবে। নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য আপনারা ঘরে ঘরে যাবেন, দুয়ারে দুয়ারে যাবেন, ভোট চাইবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে যেন আমাদের দেশ সেবা করার সুযোগ দেয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দেওয়া ইশতেহার নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের পড়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই লক্ষ্য নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। তিনি বলেন, এটা তো আমাদেরই স্লোগান আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। এই স্লোগান দিয়েই আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি, সংগ্রাম করেছি। সেই কথাটা মনে রেখে যার যার ভোট সে সে চান। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেটাই মেনে নেবেন। সেইভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের দরিদ্র থেকে শুরু করে সব মানুষের মুক্তি আসবে এবং এই দেশটা উন্নত-সমৃদ্ধ হবে। ইনশাআল্লাহ, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে আবার জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে। জনগণের কাছে সেটাই আমাদের দাবি, সেটাই আমাদের আকাঙ্ক্ষা। জাতির পিতার সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো।

সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের রেহাই দেয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের রেহাই দেয়া হবে না। দেশ অনেক আন্দোলন ও সংগ্রাম দেখেছে। কিন্তু সাংবাদিকদের কোনও সময় টার্গেট করা হয়নি। হামলাকারীরা সাংবাদিকদের মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় আমার দুঃখ প্রকাশের কোনও ভাষা নেই। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ২৮শে অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের দিন হামলার শিকার আহত সাংবাদিকেরা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে আহত সাংবাদিকদের খোঁজ-খবর নেন তিনি। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত তারা পার পাবে না। তিনি বলেন,প্রধান বিচারপতির বাড়ি, জাজেস কোয়ার্টার এবং কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলার কোনও নজির নেই। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন– একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক ও এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু এবং একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ। এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ২৮ অক্টোবর আহত সাংবাদিকদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।