কর্মজীবী মানুষের পরিকল্পনা অনেক রকমের থাকে, কিন্তু অফিসের দীর্ঘ সময় এবং প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার বাধ্যবাধকতার কারণে অনেক সময় সেগুলো ভেস্তে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মদিবস কমিয়ে আনায় কতটা সুফল পাচ্ছে, তা নিয়ে চলছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
সম্প্রতি জার্মানির কিছু কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে সপ্তাহে ৪ দিনের কর্মদিবস চালু করেছে। এর ফলে সপ্তাহে ৩ দিনের ছুটি পাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্ত কর্মচারীরা। যার ফলাফল এসেছে রীতিমতো চমকপ্রদ।
জার্মানির ৪৫টি প্রতিষ্ঠান চলতি বছর শুরুতে একটি পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে সপ্তাহে ৪ দিন কর্মদিবস চালু করার উদ্যোগ নেয়। এ পরিবর্তনটি কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তাদের জন্য কী ধরনের ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনতে পারে, তা যাচাই করার উদ্দেশ্যে এই পরীক্ষা চালানো হয়।
গবেষকরা শুরুর দিকে সমীক্ষা, সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে কর্মীদের কাজের সময় এবং চাপ পরিমাপ করেছেন। তাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে। কর্মীরা যখন কম সময় কাজ করেছেন, তখন তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে আরও ভালো বোধ করেছেন। তারা সপ্তাহে ৫ দিনের সমান কাজ করেছেন, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি কাজ করেছেন।
প্রায় ছয় মাসের এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারী কর্মীরা উল্লেখ করেছেন যে, তাদের মানসিক চাপ এবং বার্নআউটের লক্ষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এ ছাড়া গবেষণায় অংশ নেয়া কর্মীরা আরও শারীরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন এবং তাদের ঘুমের মানও উন্নত হয়েছিল।
তবে, এ পরিবর্তনের সঙ্গে কিছু অপ্রত্যাশিত ফলাফলও দেখা গেছে। যেমন, অংশগ্রহণকারীরা প্রতি মাসে অসুস্থ থাকার পরিমাণে খুব সামান্য পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম ছিল। তাছাড়া পরিবেশগত সুফলও খুব একটা পাওয়া যায়নি। কারণ কিছু কর্মী দীর্ঘ সাপ্তাহিক ছুটির সময় ভ্রমণে গিয়েছিলেন, যা পরিবেশের জন্য তেমন উপকারী ছিল না।
তবে, গবেষণার পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে এ ফলাফলগুলো একেবারে চূড়ান্ত বলে বলা যাবে না। এ ধরনের গবেষণার ফলাফল এক বছরের বেশি সময় ধরে পর্যালোচনা করা উচিত।
গবেষণা নিয়ে অবশ্য বলা যেতে পারে, যে প্রজেক্টে অংশ নেওয়া ৭০% কোম্পানি এ উদ্যোগ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক, তবে সব ক্ষেত্রেই সপ্তাহে ৪ দিন কর্মদিবস চালু করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, এ গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে গবেষকরা একটি সৃজনশীল কর্ম-সময় মডেল এবং তার প্রভাব অন্বেষণ করার চেষ্টা করেছেন, যা ভবিষ্যতে কর্ম পরিবেশের উন্নতির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
সূত্র : কালবেলা
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |