
হজযাত্রীদের ভিসা কার্যক্রম শেষ করার জন্য দুই দফায় সময় বাড়ায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এছাড়াও এজেন্সিগুলোকে চিঠি দিয়ে দ্রুত ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে আহ্বান জানায় । তবুও হজ ফ্লাইট শুরুর সপ্তম দিনেও ৫ এজেন্সি একজন হজযাত্রীরও ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি। আর আনসারি ওভারসিস নামে একটি এজেন্সি মাত্র ৫ জনের ভিসার আবেদন করেছে।
ফলে এসব এজেন্সির ১ হাজার ৮৭০ জন হজযাত্রী শেষ পর্যন্ত হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি মালিকরা বলছেন, আজকের মধ্যে অধিকাংশ হজযাত্রীর ভিসা কার্যক্রম শেষ হবে। বাড়ি ভাড়াসহ নানা জটিলতায় ভিসা কার্যক্রম শেষ হয়নি।’
এদিকে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহের স্বাক্ষরিত চিঠিতে ছয় এজেন্সিকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবারের (১৫ মে) মধ্যে এজেন্সিগুলোকে যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়াল্ডলাইন ট্যুরস অ্যান্ড লাইন, তাদের নিবন্ধনকৃত হজযাত্রী সংখ্যা ২৮৬ জন। আনসারি ওভারসিস, তাদের হজযাত্রীর সংখ্যা ২৬০, আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ৪৪৪, মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ৩৭৫, নর্থ বাংলা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস হজযাত্রীর সংখ্যা ২৬০ ও হলি দারুন্নাজ্জাত হজ ওভারসিস এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫০ জন। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।
এ বিষয়ে ওয়াল্ডলাইন ট্যুরস অ্যান্ড লাইন এজেন্সির মোনাজ্জেম হেমায়েত উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজকের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা কার্যক্রম শেষ হবে। সেইভাবে আমরা কাজ করছি। আমাদের এজেন্সির সব হজযাত্রী হজ করতে পারবে, জটিলতা হবে না।’
এদিকে নর্থ বাংলা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির লাইসেন্স নবায়ণ না হওয়ার পরেও ২৬০ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করিয়েছেন। এই এজেন্সি এখন পর্যন্ত একজন হজযাত্রীরও ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি । এ বিষয়ে ওই এজেন্সির মোনাজ্জেম লুৎফর রহমানের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমাদের এজেন্সির লাইসেন্স নবায়ণ হয়নি। তাই ঢাকায় একটি এজেন্সির মাধ্যমে আমরা হজযাত্রীদের ভিসা করার চেষ্টা করছি। খুব দ্রুতই হয়তো ভিসার কাজ শেষ হবে।’ হজযাত্রীরা হজে যেতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি যেতে পারবে।’
এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ৩১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন। সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে।