
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় মসজিদে নামাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে তানভীর আহমেদ নয়ন (১৫) নামে এক কিশোরের পায়ুপথে টয়লেট পরিষ্কারের ব্রাশ ঢুকিয়ে নির্যাতন করেছে বখাটেরা। গুরুতর আহত অবস্থায় কিশোরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার এখনো জ্ঞান ফেরেনি বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে ছাগলনাইয়া উপজেলার আহমেদ শপিং সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। সোমবার (২০ মে) সকালে এ বিষয়ে মুখ খোলে ভুক্তভোগীর পরিবার। তানভীর আহমেদ নয়ন ছাগলনাইয়া বাজারের একটি দোকানের কর্মচারী ও উত্তর যশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আহত কিশোরের বড় ভাই আল আমিন বলেন, আমার ভাই বাজারের একটি দোকানে কাজ করে। গত শনিবার দুপুরে বাজারের পাশে একটি মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ শেষে ফেরার পথে অপরিচিত এক লোক তাকে ডাক দিয়ে একটি বস্তা মাথায় তুলতে সহযোগিতা চায়। সরল মনে ভাই উপকার করতে আহমেদ শপিং সেন্টারের দোতলায় ওঠে। এ সময় পেছন থেকে আরও এক অপরিচিত ব্যক্তি ওঠেন। পরে তারা দুইজন মিলে নয়নকে মারধর করে তিনতলায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি টয়লেটে নিয়ে তার দুই হাতমুখ বেঁধে পায়ুপথে ব্রাশ ঢুকিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তারা টয়লেটের দরজার বাইরে লাগিয়ে চলে যায়।
আল আমিন আরও বলেন, প্রায় ঘণ্টাখানেক চেষ্টার পর বাঁধা হাতটি খুলতে পারে তানভীর। এদিকে দোকানের মালিক তার নম্বরে বারবার ফোন দিলেও হাত বাঁধা থাকায় ফোন ধরতে পারেনি। হাত খুলে দোকান মালিককে ফোন ধরে ঘটনা জানায়। পরে দোকানের মালিক টয়লেট থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোববার (১৯ মে) তার পায়ুপথ থেকে ব্রাশ বের করেন চিকিৎসকরা।
আল আমিন বলেন, আমার ভাইয়ের কোনো শত্রু নেই। হয়তো কোনো খারাপ কাজ করতে না পেরে তারা ভাইকে মেরে ফেলতে পায়ুপথে ব্রাশ ঢুকিয়ে দিয়েছে। বাজারের উত্তর পাশের মার্কেটগুলোতে লোকসমাগম না থাকায় সবসময় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত লোকদের আনাগোনা থাকে বেশি। হয়তো কোনো মাদকসেবীরা এই কাজ করেছে।
ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান ইমাম জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। শিশুটির মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ করছে।
ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, ছাগলনাইয়ায় শিশু নির্যাতনের সংবাদ পেয়েছি। এই প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করবো। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।