প্রচ্ছদ দেশজুড়ে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে যুবককে তুলে নেওয়ার ২ দিনেও খোঁজ মেলেনি

প্রশাসনের লোক পরিচয়ে যুবককে তুলে নেওয়ার ২ দিনেও খোঁজ মেলেনি

দেশজুড়ে: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে মো. সাগর আলী (২৫) নামে এক যুবককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার পরিবার তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তবে সাগরকে তুলে নেওয়ার দু-দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তার খোঁজ দিতে পারেনি পুলিশ। এর আগে গত শনিবার (২৫ মে) সকাল ১০টার দিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এলাকায় শ্যামলী কাউন্টারে এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ সাগর আলী উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের বাংলাবান্ধা গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে। তিনি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে শ্যামলী পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে বুকিং সহকারীর কাজ করতেন।

জিডিতে সাগরের বাবা মহসিন আলী উল্লেখ করেন, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্যামলী কাউন্টার থেকে ৭-৮ জন লোক সাদা মাইক্রোবাসে করে সাগরকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তারা নিজেদের ‘প্রশাসনের লোক’ বলে পরিচয় দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে একটি সাদা মাইক্রোবাসে আট সদস্যের একটি দল বাংলাবান্ধার ধানসিঁড়ি আবাসিক হোটেলে উঠেন। এ সময় হোটেলে রেজিস্ট্রার তাদের নাম ঠিকানা পূরণ করতে চাইলে তারা একজনের নাম লিখে বাকিদের পরিচয় লিখতে হবে না বলে জানান। পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা হোটেল ছেড়ে দিয়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ও জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেন। এরপর বাংলাবান্ধার শ্যামলী কাউন্টার থেকে সাগর আলীকে তারা মাইক্রোবাসের কাছে ডেকে নেন। পরে ওই লোকেরাই সাগরকে তুলে নিয়ে পঞ্চগড়ের দিকে রওনা দেন। সাগরের বাবা মহসিন আলী বলেন, আমার ছেলের নামে কোনো মামলা নেই। শনিবার আমার ছেলেকে তুলে নেওয়ার খবর জানতে পেরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ছুটে আসি। এরপর দুইদিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখনো পুলিশ আমার ছেলের কোনো খোঁজ জানাতে পারেনি।

হোটেল ধানসিঁড়ি আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার হাসিবুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার রাতে আমাদের আবাসিক হোটেলে ৮ সদস্যের একটি টিম রাত্রিযাপন করে। তাদের সঙ্গে পিস্তল ও ওয়াকি-টকি ছিল। তারা সাগরকে তুলে নিয়ে গেছে কিনা তা আমি নিশ্চিত নই। তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ আমাদের কাছে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাগর ভালো ছেলে। জানি না কি কারণে তাকে এভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় বলেন, নিখোঁজের বিষয়টি জানার পরই আমরা ধানসিঁড়ি আবাসিক হোটেলে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ নিয়ে গেলে অবশ্যই পরিচয়পত্র দেখিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।