
দেশজুড়ে: ‘আমি তোমাদের নিয়ে ভালো থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ওরা তা হতে দিল না।’ আত্মহত্যার আগে ভিডিওতে এমন কথা বলছিলেন, রাজশাহীর রহিমা আক্তার রেমি। ২৪ বছর বয়সী রেমির আত্মহননের আগে করা ভাইরাল সেই ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
গত ১৭ জুন রাত ৯টায় ধারণ করা হয় ভিডিওটি। যেখানে রেমি তার পারিবারিক নানা সংকটের বিষয় তুলে ধরেন। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রেমির মরদেহ পরদিন উদ্ধার করা হয় বারান্দার গ্রিল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায়। সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ জানায় আত্মহত্যার কথা। রেমির বাবা-ভাই অভিযোগ করেন নানা সময়ে শ্বশুরবাড়িতে ভালো ছিলো না রেমি। একই সাথে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের ফিরিস্তি তুলে তাকে বিপর্যস্ত করা হতো। রেমির বাবা বলেন, ‘ওর শাশুড়ি-ননদ, তাদের ছেলে সবাই অত্যাচার করতো আমার মেয়েটাকে। আমার মেয়েটা সব বলেছে আমার কাছে।’ আর তার ভাই বলেন, ‘তিন বেলা খেতে বসলেই বলতো তোর মা বিয়ে করছে, তোর ভাই বিয়ে করছে। তুই এত সাজুগুজু করিস কেন, এভাবে চলিস কেন। এগুলো শুনিয়ে সব সময় রেমিকে মানুষিক অত্যাচার করতো তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা।’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রেমির স্বামী সাইম সাগর। তিনি বলেন, ‘কোন বিপদে আপদে রেমি কাউকেই পায়নি, আমরাই ছিলাম পাশে। কিন্তু এখন একটা পক্ষ হঠাৎ করেই বেশি আপন হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা কি চাচ্ছে সেটা আমরা জানি না।’ এদিকে কথা বলার জন্যে খুঁজে পাওয়া যায়নি সাইমের পরিবারের অন্যদের। মনোবিজ্ঞানী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, পারিবারিক সম্পর্কের দোলাচলে অনেক সময় ঘটে এমন দুর্ঘটনা। এসব ক্ষেত্রে পারিবারিকভাবে মানসিক স্বাস্থ্য দেখভালের ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ তার। ৮ বছরের সংসার জীবনে রেমির ৭ বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে রেমির। তার মৃত্যুর পর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও কাউকে দায়ী করেননি তার বাবা।