হেড লাইন: জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ ঘোষণায় শঙ্কায় পড়েছেন ১০ লাখ ভারতীয়। বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন নির্বাচনে জয় পাওয়া রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান এতদিন প্রচলিত তা তিনি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির আগামীর ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের প্রচারাভিযানসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান তা বাতিল করা হবে। এর পরিবর্তে যাদের পিতা বা মাতার কারোর নাগরিকত্ব অথবা দেশটিতে বসবাসের বৈধ অনুমোদন রয়েছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া কোনো শিশু দেশটির নাগরিকক্ত পেতে হলে তার পিতা কিংবা মাতার কোনো একজনের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অথবা বসবাসের বৈধ অনুমোদন থাকতে হবে। দেশের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে এ নির্দেশনা পাঠানো হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেবেন। ওই দিন থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনসংক্রান্ত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানবিরোধী। ফলে ক্ষমতা গ্রহণের পর এমন সিদ্ধান্ত সত্যিই কার্যকর করা হলে তা সংবিধান লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটবে। মার্কিন অভিবাসন আইনজীবী গ্রেগ সিসকাইন্ড বলেন, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। ফলে এমন সিদ্ধান্ত নিলে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে। পিউ রিসার্চ সেন্টার পরিচালিত ২০২২ সালের শুমারি অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যা ৩৩ কোটি ৪৯ লাখ। এরমধ্যে বড় সংখ্যক মানুষ বৈধ-অবৈধ অভিবাসী। এ তালিকায় লাখ লাখ ভারতীয় রয়েছেন। অন্যান্য দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মতো তাদেরও একমাত্র লক্ষ্য হলো মার্কিন নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড অর্জন করা।
মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জনের অন্যতম সহজ উপায় হলো দেশটির ভূখণ্ডে সন্তান জন্মদান। কেননা দেশটির ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া যে কোনো শিশু মার্কিন আইনানুসারে নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন। ফলে শিশুর বয়স ১৮ বছর পার হওয়ার আগ পর্যন্ত তার পিতামাতাতে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ফলে বাবা মায়ের নাগরিকত্ব বা গ্রিনকার্ডের পথও অনেক সহজ হয়ে যায়। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক ক্যাটো ইনস্টিটিউটের ইমিগ্রেশন স্টাডিজের পরিচালক ডেভিড জে বিয়ারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মার্চে আমেরিকার গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় থাকা ভারতীয়র সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু ও বার্ধক্যের মতো কারণ বিবেচনা করলে একজন ভারতীয়কে গ্রিন কার্ডের জন্য ৫৪ বছর অপেক্ষা করতে হবে। আর এসব কারণ বিবেচনা বাদ দিলে তা বেড়ে ১৩৪ বছরে দাঁড়াবে। এর ফলে কার্ড পাওয়ার আগেই চার লাখ ভারতীয় মারা যাবেন এবং এক লাখের বেশি শিশুকে প্রভাবিত হবে। গবেষণা সংস্থা স্থা পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভুত আমেরিকান রয়েছেন। এসব লোকের মধ্যে ৩৪ শতাংশ বা ১৬ লাখ দেশটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন।
সূত্র: কালবেলা
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |