ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নৃশংসভাবে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলা নারীর মাথা মঙ্গলবার দুপুরে উদ্ধার হয়েছে। মাথা দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছে পুলিশ। ওই নারী হলো উপজেলার হীরাপুর এলাকার নুরুল ইসলাম বেপারীর স্ত্রী হরলুজা বেগম (৫০)।
পুলিশ জানায়, আটককৃত যুবলীগ নেতার ছেলে ফারহান রনি ভোরে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তবে কি কারণে তাকে এখানে আনা হয় কিংবা কেন হত্যা করা হয় এ বিষয়ে পুলিশ বিস্তারিত জানায়নি।
দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ ভূইয়ার ছেলে। তিনি চিহ্নিত মাদকসেবী। এর আগে, ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর পোড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার দেহের বেশিভাগ অংশ পুড়ে গেছে। হাতে চুরি থাকায় দেহটি নারীর বলে ধারণা করা হয়।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যুবলীগ নেতা শাহ নেওয়াজ ভূইয়ার পরিত্যক্ত এক চালা টিনের ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে প্রতিবেশী যুবক ইমরানসহ আরো কয়েকজন এগিয়ে যান। ওই ঘরের সামনে ফারহান রনিকে দেখে আগুনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন পাতা পোড়া দিয়েছেন। বিষয়টি তাদের সন্দেহ হওয়ায় ঘরের ভেতরে উঁকি দেন। এতে তারা মাটিতে মানুষ আকৃতির দেহে আগুন জ্বলছে দেখতে পান। পাশে একটি গর্তও রয়েছে। এছাড়া পাশেই একটি পোড়া কাপড় পড়ে আছে। এ সময় ফারহান ক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে মারার হুমকি দেন। পরে এলাকাবাসী মিলে ফারহানকে ধরে পুলিশকে খবর দেন। এদিকে মানুষ পুড়িয়ে মারার খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত লোক ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
শাহ নেওয়াজ ভূইয়ার ভাড়াটিয়া প্রত্যক্ষদর্শী মনোয়ারা বেগম বলেন, ভোরে ওই ঘর থেকে নারীকণ্ঠের চিৎকার শুনতে পাই। কেউ একজন বলছে, ‘মাইরা লাইতাছে গো, মাইরা লাইতাছে’। একটু পরে আমি ঘর থেকে বের হয়ে দেখতে গেলে রনি আমাকে বলে ‘যাও, এখান থেকে চলে যাও’।
গ্রামের একাধিক লোকজন জানান, রনি একজন মাদকাসক্ত। কোনো কাজ কর্ম করে না। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিল। বউ চলে গেছে। তিনি একজন উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির লোক।
আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) শাহীনুর ইসলাম বলেন, একজনকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তার দেহের বেশিভাগ অংশ পুড়ে গেছে। পরে আটক যুবকের তথ্যমতে, মাথা উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। কিভাবে কি ঘটানো হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, ফারহান রনি মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে এক নারীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। মরদেহের গলা থেকে ঊরু পর্যন্ত অংশ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। নিহতের একটি হাতে চুরি থাকায় দেহটি নারীর বলে ধারণা করা হয়। পরে তার পরিচয়ও পাওয়া যায়।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |