
সারাদেশ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতা হারানোর পর আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেনঃ-
ধানমন্ডি ৩/এ অফিসে ছাত্রলীগের সাবেকরা অসহায়ের মতো কাদের সাহেবের রুমে দাড়িয়ে বসে থাকতাম আর তাদের জোকারি দেখতাম । কাদেরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো কাদেরের ৫ ব্যক্তিগত কর্মচারী। কোনো কোনো সময় নিজেকে অসহায় লাগতো ।
আর কেন্দ্রীয় নেতারা গোপন মিটিংয়ের নামে ছোট এক রুমে কয়েকজন বসে সিগারেট টানতো আর ভোগাস থার্ড ক্লাস ক্যাটাগরির আলাপ করতো আন্দোলনের পুরো মাস। কাদেরের কর্মচারীদের ভয়ে অনেকেই তটস্থ থাকতো। আর বেশীরভাগ কেন্দ্রীয় নেতার পি এস এপিএস বিড়িতে আগুন দেওয়া লোক প্রেসার মাপার লোক জুতা পরানোর লোক ভ্যাপ নিয়ে দাড়িয়ে থাকা লোকদের দাম সাবেক ছাত্রনেতাদের চাইতে বেশী ছিলো কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।
মাননীয় আপা ওবায়দুল কাদের আমাদের সাবেক ছাত্রনেতাদের সাথে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাদের সাথে কুকুরের মতো আচরন করতো। আপনাকে কোন কিছুই জানতে দেওয়া হতোনা।আপা আমাদের নিজেদের বিচার আপনি আগে করেন আমার ভূল আছে আমারও বিচার করেন প্রয়োজন পরলে। নিজেদের বিচার করে তারপর আপনি নতুন করে আপনার টিম সাজিয়ে দেন।এই ভন্ডগুলোর কোন ক্ষমতা জনপ্রিয়তা কিচ্ছু নাই ।সাধারন মানুষ দুরে থাক আমাদের আওয়ামীলীগের লোকজন তাদের কারো কারো দেখলে একদলা থুথু ফেলে।
আপা ১/১১ তে আমরা পেরেছি ২৪/২৫ এও পারবো তবে এবার কাউকে মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে দিবোনা । ** আপা আওয়ামীলীগের মধ্যে একটা জরিপ চালান দেখবেন শতকরা ৯৯.৯৯% নেতাকর্মী কাদের এবং বেশীরভাগ কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘৃনা করে তবে আপনার জন্য যে কোন কিছু করতে রাজি । সারাদেশে নেতাকর্মী সবাই আপা সরাসরি আপনার নির্দেশনার অপেক্ষায় অন্য কাউকে গুনেও না সে যেই হোক যতবড় লোক হোক ।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতা হারানোর পর আওয়ামী লীগের নেতাদের সবার আগে আত্মশুদ্ধি ও আত্মসমালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি। পোস্টে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবানও জানিয়েছেন নাজমুল। পাশাপাশি বিবেকের আদালতে নিজেদেরকে শাস্তি দেওযার কথা বলেছেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা বলেন, ‘আত্মশুদ্ধি, আত্মসমালোচনা করা দরকার সবার আগে। ব্যক্তিগতভাবে আমি করছি প্রায় ১০ বছর ধরে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে বিবেকের আদালতে নিজেদেরকে শাস্তি দিয়ে তৃণমূলের কাছে আমরা যারা জাতীয় রাজনীতি করি প্রায় সবাইকে ক্ষমা চাইতে হবে। আদর্শ আর ক্ষমতা এক জিনিস না। এই পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়। দেখা যায় বৃহস্পতিবার সকালে এই পোস্টে ২৩ হাজার লাইক, ছয় হাজার কমেন্ট ও তিনশ’ শেয়ার হয়েছে। এতে হাজারো মানুষ সিদ্দিকী নাজমুল আলমের সমালোচনা করেন। আবার অনেকে বলেছেন, সময়সুযোগী একটি সেরা পোস্ট। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। মোকতাদির হাসান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, টাকার বিনিময়ে কমিটি দিয়ে ছাত্রলীগকে ধ্বংস করেছেন রব্বানি, সাদ্দাম ও আপনার মতো লোকেরা।
এখন ফেসবুকে বড় বড় কথা বলছেন। আগে নিজে সংশোধন হোন। ইউসুফ আলী নামে একজন লিখেছেন, কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করতে মনুষ্যত্ববোধ থাকা লাগে। যা পতিত ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীর মধ্যে নেই। মো. কাউসার নামে একজন লিখেছেন, ক্ষমতায় থাকলে নীতিবাক্য সবাই ভুলে যায়। এটাই আফসোস। এই বুঝটা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় থাকলে কী হতো ভাই। তখন এই ধারণা থাকলে এভাবে ক্ষমতা হারাতে হতো না। আসলে সবই আনাদের সাজানো নাটক। ফয়সাল আবেদীন নামে একজন লিখেছেন, নতুনভাবে মাঠে আসার ধান্দা। যে দলে নেত্রী তৃণমুলকে বিপদে ফেলে চলে যায়, তার দলের রাজনীতি করা অশিক্ষিত পরিচয়। আবার কেউ কেউ বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিনা অপরাধে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। এই দলকে নিষিদ্ধ করা উচিত। তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই।