প্রচ্ছদ জাতীয় মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহকদের জন্য বড় দুঃসংবাদ

মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহকদের জন্য বড় দুঃসংবাদ

জাতীয়: মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর আবারও তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সরকারের অনুমোদনের পর আজ প্রজ্ঞাপন জারির কথা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ফোন সেবার ওপর তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর অনুমোদন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (আজ) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এদিকে নতুন করে কর আরোপ করার ফলে ছয় মাসের ব্যবধানে আবার খরচ বাড়ছে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের। মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে গুনতে হবে বাড়তি টাকা। বর্তমান ৩৯ শতাংশের স্থলে কর দিতে হবে ৪২ শতাংশ।

এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। এখন সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর।

বর্তমানে মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ দিতে হয় ২৮.১ টাকা, রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স ৬.১ টাকা, পরোক্ষ কর ২০.৪ টাকা, অর্থাৎ ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে কর দিতে হয় ৫৪.৬ টাকা। আর সম্পূরক শুল্ক ৩ শতাংশ বাড়ানোর পর কর দিতে হবে ৫৭.৬ টাকা।

মোবাইল অপারেটরদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকার রিচার্জ বা ইন্টারনেট খরচের বিপরীতে গ্রাহককে কর দিতে হয় ৩৯ টাকা। অর্থাৎ গ্রাহক ব্যবহার করতে পারেন ৬১ টাকা। নতুন করহার কার্যকর হলে ১০০ টাকায় সরকার করবাবদ কেটে রাখবে ৪২ টাকা, আর গ্রাহকের ব্যবহারযোগ্য টাকা কমে দাঁড়াবে ৫৮ টাকায়।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল আলম বলেন, এ মুহূর্তে সরাসরি কাস্টমার ট্যাক্স হচ্ছে ৩৯ শতাংশ। আর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর মিলিয়ে আছে ৫৬ শতাংশ। এখন ১০০ টাকায় ৫৬ টাকা সরাসরি ট্যাক্স চলে যায়। এটা আরও তিন শতাংশ বাড়লে কাস্টমারদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, যখনই এরকম ট্যাক্স বাড়ানো হয় সরকারের কিন্তু তেমন লাভ হয় না। কারণ মানুষ তখন খরচ কমিয়ে ফেলে। এতে সরকার ও আমাদের রেভিনিউ কমে যায়। গত চার মাস ধরে মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ও রেভিনিউ কমছে। এটি হলে আরও কমবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা মনে করি ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বের মধ্যে তলানিতে আছি। অন্যদিকে ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে।

যেখানে দেশের এখনও ৪৮ শতাংশ জনগণ ইন্টারনেট সেবার বাইরে আছে সেখানে নতুন করে এ উচ্চ করহার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে, নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

মনিরুল ইসলাম নামে বেসরকারি এক চাকরিজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মোবাইল সেবার মান খুব খারাপ। খোদ রাজধানীতেই নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। কথা বলার সময় বারবার কলড্রপ হয়। সেদিকে সরকারের কোনো লক্ষ নেই। শুধু সাধারণ মানুষের কীভাবে পকেট কাটা যায় সেই পলিসি করে। আমরা অসহায়, কিছু বলার নেই।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ এমন সময় নেওয়া হচ্ছে যখন দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমছে। বিটিআরসির সবশেষ তথ্যমতে, গত অক্টোবর মাসের তুলনায় নভেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে প্রায় ৪০ লাখ।

২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলার ওপর প্রথমবারের মতো ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।