প্রচ্ছদ জাতীয় সীমান্তে ‘আল্লাহু আকবার’-‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান; কী হয়েছিল সেদিন?

সীমান্তে ‘আল্লাহু আকবার’-‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান; কী হয়েছিল সেদিন?

জাতীয়: সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাংলাদেশ-ভারতের চৌকা সীমান্তের দুই দিকেই গ্রামের মানুষজন জড়ো হয় সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে। এ রকম বেশকিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশ অংশে বেশি সংখ্যক লোকজন জড়ো হয়েছে, অন্যদিকে ভারত অংশে কিছু মানুষকে লাঠি রামদা, কাস্তের মতো অস্ত্র হাতে ‘বান্দে মাতরম’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়। যদিও বিবিসি স্বাধীনভাবে এ ভিডিও যাচাই করতে পারেনি।

কী ঘটেছিল সেখানে?

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত সোমবারে। এর আগে সীমান্তের ১২০০ গজের মতো অংশে কোনও কাঁটাতারের বেড়া ছিল না এবং সেই বেড়া তৈরির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ভারতের অভ্যন্তরে ১০০ গজ ভেতরে মাটি খোঁড়া হচ্ছিল বলে জানান ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। বিজিবি থেকে এনিয়ে বাধা দেয়া হয় এবং সাময়িকভাবে কাজ থামানো হয়।নিয়ম অনুযায়ী সীমান্ত লাইন থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কিছু করা হলে সেটা অপর পাশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সঠিক নিয়ম মেনে অবহিত করতে হয় যেটা এক্ষেত্রে ভারতের বিএসএফ বাংলাদেশের বিজিবিকে জানায়নি। সোমবার দুই দেশের বাহিনীর পতাকা-বৈঠক হলেও মঙ্গলবারে আবারও নির্মাণকাজ শুরু হয়। মঙ্গলবারেও দুই পক্ষের বৈঠক হয় এবং তার পরও বুধবারে আবারও একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হয়। এসময় পরিস্থিতি উতপ্ত হলে বাংলাদেশের অংশের মানুষ ভারতের উদ্দেশে এবং ভারতীয় অংশের মানুষ বাংলাদেশের উদ্দেশে স্লোগান দেন বলে জানান বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন।

ভারতের অংশে তোলা কিছু ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে অনেকর হাতে রামদা দেখা গেলেও একরকম হাস্যরসাত্মক পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- একজন রামদা শানাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে কাটার জন্য শান দিচ্ছেন বলে হাসতে হাসতে জানান। আরেকজন কাঁধে বস্তা নিয়ে মশকরাচ্ছলে ভিডিওতে বলছেন, ‘বোম, বোম, বোম, ফুটিয়ে দেব বাংলাদেশকে।’ বাংলাদেশ অংশের মানুষের মধ্যে অবশ্য উৎসাহ উদ্দীপনার পাশাপাশি উৎকণ্ঠাও ছিল। ওপার থেকে ‘বন্দে মাতারাম’ ‘জয় শ্রীরাম’ এমন স্লোগান দেয়া হচ্ছিলো, তখন বাংলাদেশের মানুষ ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ বলে জবাব দেয়। এদিকে সবশেষ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাতের পর বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে এবং এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবার আর নির্মাণকাজ চালানো হয়নি বলে জানান ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। প্রসঙ্গত, বিজিবির বেশ কয়েকজন জানান আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শূন্য রেখা বরাবর দুই দেশের অন্তত দেড়শ গজের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে দুই দিকের সম্মতির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ-ভারতের ১৯৭৫ সালের নীতিমালা অনুযায়ী সীমান্ত লাইন নির্ধারিত হওয়ার পর লাইনের উভয় পাশে ১৫০ গজের মধ্যে কোনও পক্ষই স্থায়ী বা অস্থায়ী সীমান্ত রক্ষী বা সশস্ত্র কর্মী রাখবে না এবং উভয় পাশে ১৫০ গজের মধ্যে (মোট ৩০০ গজ এলাকায়) কোনও প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো, যেমন পরিখা বা অন্যকিছু থাকলে সেগুলো ধ্বংস বা ভরাট করতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।