ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সাবেক সিটি মিনিস্টার ও লেবার পার্টির নেতা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে এনসিএ’র গোপন বৈঠকের পর এই তদন্তের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন। উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের ৯০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে রাশিয়া, এবং এটি পরিচালনা করছে রুশ কোম্পানি রোসাটম। এছাড়া, এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
যদি দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে ব্রিটেনের ব্রাইবারি অ্যাক্ট-২০১০ অনুযায়ী টিউলিপ সিদ্দিক সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন। আইন অনুযায়ী, কোনো ব্রিটিশ নাগরিক বিদেশে ঘুষ গ্রহণ করলে ব্রিটেনে তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে এবং শাস্তির বিধান রয়েছে।
এনসিএ’র তদন্ত দল বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। সূত্রের দাবি, এনসিএ শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, বরং ব্রিটেনেও টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
এনসিএ’র এটি বাংলাদেশে দ্বিতীয় সফর। এর আগে, গত বছরের অক্টোবরে সংস্থাটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্নীতির তদন্তে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য প্রতি বছর প্রায় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড বিদেশে পাচার করতেন।
চলমান তদন্তের মধ্যেই গত মাসে লেবার পার্টির পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। ধারণা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির তদন্তই এই সিদ্ধান্তের পেছনের মূল কারণ। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আরও দুটি ফৌজদারি তদন্ত পরিচালনা করছে।
তবে, লেবার পার্টির একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত এনসিএ বা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কেউ টিউলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এনসিএ ও ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বাংলাদেশ সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, এনসিএ তাদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টিউলিপের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। একই সঙ্গে, ব্রিটেনের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট আসনের এমপির বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টাও করছে সংস্থাটি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |