বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কি ঢাকার হাতে তুলে দেবে নয়াদিল্লি? ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ দাবি করেছে বাংলাদেশ। ভারতকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ভারত সরকারের অবস্থান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিংহ।
তিনি জানিয়েছেন, এখনও বাংলাদেশকে এ বিষয়ে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।
রাজ্যসভায় কেরলের সিপিএম সাংসদ জন ব্রিট্টাস হাসিনা সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। তিনি মোট তিনটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলেন—
বাংলাদেশ কি তাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছে?
যদি তা-ই হয়, তবে প্রত্যর্পণের জন্য কী কী কারণ দেখিয়েছে ঢাকা?
ভারত সরকার এ সম্পর্কে কী জবাব দিয়েছে ঢাকাকে?
কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ হাসিনার প্রত্যর্পণ দাবি করেছে। ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট হাসিনা ভারতে আসার আগে বাংলাদেশে যে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার ভিত্তিতে এই প্রত্যর্পণ দাবি করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ বিষয়ে কোনও জবাব এখনও পাঠানো হয়নি।’’
উল্লেখ্য, হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লিকে ‘কূটনৈতিক চিঠি’ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। একাধিক অপরাধে হাসিনা অভিযুক্ত বলে দাবি করেছিল তারা। ওই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছিল ভারত সরকার।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছিলেন, হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশের একটি চিঠি তাঁরা পেয়েছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য এখনই করা যাবে না।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, আগে ওই চিঠির বৈধতা যাচাই করতে চায় নয়াদিল্লি। কোনও দেশের অন্তর্বর্তী সরকার অন্য রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়ায় সময় লাগতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি বিদেশ মন্ত্রক।
এর আগে, বুধবার রাত থেকে বাংলাদেশে আবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঢাকায় ৩২ ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙা হয়েছে হাসিনার ধানমন্ডির বাড়িও। বুধবার রাতে হাসিনা ভার্চুয়ালি বাংলাদেশিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেই অনুষ্ঠানের প্রচার আগে থেকে করেছিল আওয়ামী লীগ। হাসিনা-বিরোধীরা এর ফলে ক্ষুব্ধ হন। ভাষণ শুরুর আগেই ধানমন্ডিতে জমায়েত করে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান এবং মুজিবের বাড়িতে ভাঙচুর করেন। ওই বাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয়। বৃহস্পতিবারও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে।
বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ভারত থেকে হাসিনা উস্কানিমূলক বিবৃতি দিচ্ছেন। এর ফলে বাংলাদেশের শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসিনাকে চুপ করানোর জন্য ভারতকে লিখিত ভাবে অনুরোধও করেছে ঢাকা। তলব করা হয়েছিল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপ-রাষ্ট্রদূতকে। এই পরিস্থিতিতে হাসিনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের আবার অবনতি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |