
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় জমিতে গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের আস্তমা ও কামরূপদলং গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে আস্তমা গ্রামের কৃষক বজলু মিয়ার গরু কামরুপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খায়। এ নিয়ে জমিতেই দুই কৃষকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও মারামারি হয়। পরে এ নিয়ে দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জেরে রোববার সকালে গ্রামের পশ্চিম বন্দে দুই পক্ষ লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
আস্তমা গ্রামের আঙ্গুর মিয়া জানান, গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের গ্রামের বজলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করেন জমির মালিক কামরুপদলং গ্রামের সুরুজ মিয়া। এতে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় কামরুপদলং গ্রামের নুরুল ইসলামসহ কয়েকজন এসেছিলেন ঘটনাটি সালিশ মীমাংসার জন্য। গ্রামের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু রোববার সকালে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
কামরুপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকেলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমরা চেয়েছিলাম বিষয়টি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে শেষ করতে। কিন্তু আস্তমা গ্রামবাসী বিচার না মেনে সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের গ্রামের দিকে এগিয়ে আসলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হন।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- আস্তমা গ্রামের আক্তার হোসেন (৩০), দুলাল মিয়া (২০), জুয়েল মিয়া (৩০), শামসুজ্জামান (২৮), নাছির আলী (৫০), আবদুল জলিল (৩০), খাইরুল আমীন (২৬), এমরান হোসেন (২৮), সাদিক মিয়া (৪৫), নুরুজ্জামান (৩৫) ও সৌরভ হোসেন (২৬)। এর মধ্যে আক্তার হোসেন ও দুলাল মিয়াকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কামরুপদলং গ্রামের আহতরা হলেন- বাতির আলী (৫৬), সুন্দর আলী (৭০), সুজন মিয়া (৩৫), কালাই মিয়া (২৭), মতিউর রহমান (৩২), শওকত আলী (২৭), নবী হোসেন (২২) ও শাফি আহমেদ (২৫)। এর মধ্যে বাতির আলী, সুন্দর আলী ও সুজন মিয়াকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কোনো আটক নেই। যদি কোনো পক্ষ মামলা করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।