
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্দোলন চলাকালে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ ও ‘গণহত্যার’ অভিযোগে ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশি বংশদ্ভূত এক ব্রিটিশ আইনজীবী আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে (আইসিসি) মামলা দায়ের করেন।
এরই মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানিতে সুইজারল্যান্ডে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ২৭ জন লবিস্ট অংশগ্রহণ করেছেন। তবে ফ্যাক্টচেকের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ভিডিওটির সঙ্গে এই দাবির কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি একটি বিভ্রান্তিকর প্রচারণা।
গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়, যেখানে কুয়াশাচ্ছন্ন একটি রাস্তায় গাড়িবহরকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি সুইজারল্যান্ডে শেখ হাসিনার মামলার শুনানিতে অংশগ্রহণকারী লবিস্টদের বহর।
‘আওয়ামী লীগ পরিবার’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ কয়েকটি পেজ ও গ্রুপে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়া হয়। আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ভিডিওটি ২৪ হাজার বার দেখা হয়েছে, ১৩০০ রিঅ্যাকশন, ১৫১টি কমেন্ট এবং ২২৭টি শেয়ার হয়েছে।
ভিডিওটির কিপ-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গেছে, এটি আসলে ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 11 Alive-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিও।
প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাড়িবহরের, যখন তিনি ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফল পরিবর্তনের চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আটলান্টার ফুলটন কাউন্টি কারাগারে আত্মসমর্পণ করতে গিয়েছিলেন।
গুগলে অনুসন্ধান করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের ২৫ আগস্ট ২০২৩ সালের একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, যেখানে একই ভিডিওর কথা উল্লেখ রয়েছে। Fox5ny-এর ওয়েবসাইটেও ২৪ আগস্ট ২০২৩ তারিখে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
সুত্রঃ চ্যানেল 24