
যুক্তরাজ্যের দ্য লন্ডন ক্লিনিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মূল চিকিৎসা শেষ। এখন তিনি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে অন্যান্য চিকিৎসা নিচ্ছেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো আছেন। দেশে ফেরা নির্ভর করছে তার সিদ্ধান্তের ওপর। ফেরার আগে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার চূড়ান্ত চেকআপ করানো হবে। গত ৭ জানুয়ারি রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
জানা যায়, ছেলে, দুই পুত্রবধূ ও তিন নাতনির সঙ্গে আনন্দে সময় পার করায় মানসিক অবস্থা বেশ ভালো খালেদা জিয়ার। শিগগির দেশে ফিরতে চান তিনি। তবে তারেক রহমান চাচ্ছেন, ঈদুল ফিতর পর্যন্ত মাকে কাছে রাখতে।
এদিকে সম্প্রতি ‘মারা গেলেন খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায়’ ও ‘বেগম খালেদা জিয়া আর পৃথিবীতে নেই’ শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে বিষয়টি সত্য নয়। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে শনিবার (১ মার্চ) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
তাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার মৃত্যুর সংবাদটি সত্য নয়। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Jalal Uddin Wasim নামক ফেসবুক প্রোফাইলে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। সেই পোস্টের একটি ছবির সঙ্গে আলোচিত ছবির মিল রয়েছে।
পোস্টের ছবিটির বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম Jalal Uddin Wasim এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “ছবিটি তার মায়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময়ের এবং তার মা মারা যাওয়ার কিছু দিন পূর্বে ছবিটি তোলা হয়।”
উল্লেখ্য, ছবিটি ব্যবহার করে ২০২১ সালে একই ধরণে দাবি প্রচার করা হলে তখন রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার ছবি নয় এটি’ শিরোনামে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবির ব্যক্তি খালেদা জিয়া নন।
পরবর্তীতে, আলোচিত দাবিতে থাকা অডিও ক্লিপ পর্যবেক্ষণ করলে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ৮ জানুয়ারি ‘খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার সর্বশেষ তথ্য’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেই ভিডিওর অডিও বার্তার সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির অডিও বার্তার মিল রয়েছে।
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির ০০:০১ থেকে ০০:১৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে মূল ভিডিওর ০০:০৩ থেকে ০০:১০ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি যেখানে ‘‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনের পথে রয়েছেন। তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।” বলা হয়েছে সেখানে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অংশটি প্রতিস্থাপন করা হয়।
যার ফলে আলোচিত ভিডিওতে এটি ‘‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২ টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষায়িত এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকা ছাড়েন তিনি” হিসেবে দেখা যায়।
খালেদা জিয়ার সন্তান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো প্রকার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এই প্রতিবেদনটি লিখার সময় পর্যন্ত গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে খালেদা জিয়ার একটি ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়। তিনি এখন চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। সুতরাং, লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সুত্রঃ
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |