প্রচ্ছদ জাতীয় গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে থাকলেও মৃত্যু থেকে পালাতে পারেনি সাগর

গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে থাকলেও মৃত্যু থেকে পালাতে পারেনি সাগর

পুলিশের ভয়ে ৭ মাস ধরে বাড়িতে আসতে পারছিলেন না এমদাদ সাগর। তবে তিনি বাড়িতে আসলেন ঠিকই। কিন্তু জীবিত নয়, লাশ হয়ে। সাগরের জন্য এখন কাঁদছে পুরো বিজয়নগর। চোখের জলে ভাসছে তার নিজ গ্রাম খাদুরাইল। 

এর আগে, গত সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকার গুলশানের শাহজাদপুরে হোটেল সৌদিয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪ জন মারা যান। তার একজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার খাদুরাইল গ্রামের হাজী জারু মিয়া মেম্বারের ছোট ছেলে এমদাদ সাগর (৩৩)। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মধ্যরাতে তার লাশ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি খাদুরাইলে আনা হয়। 

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাগর ছিল ৫ ভাই ও ৭ বোনের মধ্যে সবার ছোট। পরিবারে ছিল সবার আদরের পাত্র। যে কোন আবদার চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করে দিতেন তার ভাইয়েরা। জারু মিয়ার পরিবারটি ছিল আওয়ামী লীগ পরিবার। সে সুবাদে সাগর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। সে বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিল ও বর্তমানে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিল। 

সাগরের পারিবারিক সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাগর বাড়িছাড়া। ২০১৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত ইসলামের মিছিলে হামলায় একজন কর্মী মারা যান। ওই মামলায়  আসামি করা হয় সাগরকে। এরপর থেকে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে সে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। সেখানে কয়েক মাস থেকে শ্রীলংকা হয়ে ঢাকা আসে ২ মার্চ, ওঠেন রাজধানীর শাহজাদপুরের হোটেল সৌদিয়ায়। পরিবারের কেউ জানতো না সাগর ঢাকায় আছে। পরে সোমবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ডে তার মৃত্যু হয়।

সাগরের মা নূরজাহান বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার সাগরের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছে রোববার সেহেরির সময়। সাগর আমারে কইছে গরুর মাংস যাতে না খাই। খাইলে আমার ডায়াবেটিক বাইড়া যাইব। তয় সে যে দেশে আইছে, এই কথা আমারে কইছে না।

তিনি আরও বলেন, আমার মতো আর কোন মায়ের কোল যেন খালি না হয়। এমন আর কোনো সাগরকে যেন পলাতক থেকে পুড়ে মরতে না হয়।

নিহত সাগরের বড় ভাই অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম খোকন বলেন, সাগর যে দেশে এসেছে সেই কথা আমরা জানতাম না। বুধবার বিজয়নগর থানা থেকে পুলিশ এসেছে আমাদের বাড়িতে। পুলিশ বলে গেছে গুলশানে অগ্নিকাণ্ডে সাগর মারা গেছে। তার লাশ মর্গে পড়ে আছে। লাশ শনাক্ত করে আনার জন্য। আমরা মর্গে গিয়ে সাগরের লাশ সনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে আসি। 

তিনি আরও বলেন, আমরা আওয়ামীমনা পরিবার। সাগর বিজয়নগর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল। ৫ আগস্টের পর একটি হত্যা মামলায় সাগরকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে সে বাড়িছাড়া ছিল।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।