
মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে চারবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ। এটি কি স্বাভাবিক ঘটনা, নাকি আসন্ন কোনো ভয়াবহ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে? সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভূমিকম্পপ্রবণ বাংলাদেশে প্রতি ১০০ বছরে একবার বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটে। সর্বশেষ এমন একটি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ১৯১৮ সালে, যা হিসাব করলে ২০১৮ সালে ১০০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ফলে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশ এখন শতকের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলো বড় মাত্রার একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে। ৭ বা তার বেশি মাত্রার একটি ভূমিকম্পে বাংলাদেশ ভয়াবহ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূতাত্ত্বিক গবেষণা বলছে, বাংলাদেশ এমন একটি অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে তিনটি প্রধান টেকটনিক প্লেট—ভারতীয়, ইউরেশিয়ান ও বার্মা প্লেট—একসঙ্গে সংযুক্ত। এই প্লেটগুলোর সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশ সবসময় প্রবল ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকে।
২০০৯ সালে সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি ও জাইকার যৌথ জরিপে দেখা গেছে, যদি ঢাকায় ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তাহলে— ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ৭৩% রাস্তা সংকীর্ণ, ফলে ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনেক এলাকায় হয়তো উদ্ধার কার্যক্রম চালানোই সম্ভব হবে না।
এছাড়া, ঢাকার ৭% ভবন অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে নির্মাণ করা হয়েছে, যা বড় ভূমিকম্পে সঙ্গে সঙ্গে ধসে পড়তে পারে। একইসঙ্গে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইনের বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে, যা উদ্ধার কাজকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্প মোকাবিলায় সরকার ও নাগরিকদের সচেতন হতে হবে এবং প্রস্তুতি নিতে হবে। ভূমিকম্প-প্রতিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ, উদ্ধার পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |