প্রচ্ছদ ধর্ম কাউকে জোর করে রোজা রাখানোর বিষয়ে যা বলছে ইসলাম

কাউকে জোর করে রোজা রাখানোর বিষয়ে যা বলছে ইসলাম

সিয়াম বা রোজা হলো ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। এটি একটি ফরজ ইবাদত। তবে কেউ যদি রোজা না রাখে, তাহলে তাকে জোর করে রাখানো বা শাস্তি প্রদান করা ইসলাম সমর্থন করে না।

ইসলাম ধর্মে কেউ রোজা না রাখলে তাকে বলপ্রয়োগ করার অনুমতি প্রদান করা হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে নসিহত ও সদুপদেশের প্রদানের দ্বারা সঠিক পথে নিয়ে আসার শিক্ষা দেয় ইসলাম।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘আল্লাহ কোনো ব্যক্তিকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো দায়িত্ব দেন না।’ (সূরা আল-বাকারা: ২৮৬)

রমজানে রোজা রাখার ক্ষেত্রে কেউ যদি শারীরিক বা মানসিকভাবে উপযুক্ত না হন, তবে তাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। যেমন: অসুস্থ, মুসাফির এবং বৃদ্ধ ইত্যাদি।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সিয়াম বা রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের যারা পীড়িত থাকবে বা ভ্রমণে থাকবে, তারা অন্য সময়ে এর সমপরিমাণ সংখ্যায় পূর্ণ করবে। আর যাদের রোজা পালনের সক্ষমতা নেই, তারা এর পরিবর্তে ফিদিয়া দেবে (প্রতি রোজার জন্য) একজন মিসকিনকে (এক দিনের নিজের) খাবার দেবে। অতএব যে ব্যক্তি অধিক দান করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর যদি তোমরা পুনরায় রোজা পালন করো, তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৪)।

ফিদিয়া শব্দের অর্থ বিনিময়, মূল্য, পণ বা মুক্তিপণ; বিকল্প বা স্থলাভিষিক্ত; সম্মানজনক প্রতিদান ইত্যাদি। পরিভাষায় ফিদিয়া হলো রোজা পালনে অক্ষম ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে যা দান করেন। তবে রোজা পালনে সক্ষম ব্যক্তি ফিদিয়া দিয়ে রোজার দায়মুক্ত হতে পারবেন না।

আল্লাহর রাসুল (সা.) এক রমজানে রোজাদার অবস্থায় মক্কা শরিফের পথে যাত্রা করলেন। কাদিদ নামক স্থানে পৌঁছানোর পর তিনি রোজা ছেড়ে দিলে সবাই রোজা ছেড়ে দেন। (বুখারি: ১৮২০)।

একটি হাদিসে আল্লাহর রসুল (সা.) বলেন, আমাকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আমি মানুষের সাথে লড়াই করব যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তার রাসুল।’ যখন তারা এটি বলবে, তখন তাদের রক্ত ও সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ, ইসলামসম্মত কারণে ব্যতীত। আর তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল। (সহিহ বুখারি: ২৫ এবং সহিহ মুসলিম: ২২)

নবিজি (সা.) কখনও কাউকে ইবাদত করতে বাধ্য করেননি। বরং সদুপদেশ, ভালো আচরণ ও উদাহরণের মাধ্যমে তিনি মানুষকে ইসলামের পথে আসতে উদ্বুদ্ধ করতেন।

হাদিসে কুদসিতে বলা হয়েছে, ‘রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব।’ তাই বলা যায়, কেউ রোজা না রাখলে তাকে বাধ্য করা উচিত হবে না। তবে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা থাকলে ইসলামের আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিতে পারে রাষ্ট্র। এ ক্ষেত্রে কেউ কাউকে ব্যক্তিগতভাবে শাস্তি দিতে পারে না। এর বিধান ইসলামে নেই।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।