প্রচ্ছদ হেড লাইন আরাকান আর্মির সাথে কী সংলাপ করবে বাংলাদেশ

আরাকান আর্মির সাথে কী সংলাপ করবে বাংলাদেশ

হেড লাইন: ঢাকার কাছে নারায়ণগঞ্জ থেকে সম্প্রতি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং তাদের শীর্ষ নেতা আতাউল্লাহ জননীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এই সংগঠন, যা মূলত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে কাজ করলেও বর্তমানে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার পক্ষে কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযান চালানো হয়েছে। আরাকান আর্মি, যেটি মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, তাদের লক্ষ্য ছিল রাখাইন প্রদেশে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। সম্প্রতি তারা নাম পরিবর্তন করে ঘোষণা করেছে যে তারা শুধু রাখাইন নয়, রোহিঙ্গা, কুকি, চীনসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সম্মিলিত স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করবে। গত বছর ২৩ ডিসেম্বর থেকে তারা চীন আর্মির সাথে মিলিত হয়ে দুই প্রদেশ পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

চীন বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর জন্য আরাকান আর্মির সাথে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস বলেছেন, “এখানে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত মানবিক আইন মেনে অসহায় মানুষের সুরক্ষা এবং সম্প্রদায়গত সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা।” বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ রাখছে, কারণ দেশের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের অনেক অংশ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্যে কিছু অংশ নদী পথে, কিছু অংশ স্থলপথে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “এবারের ঈদ হয়তো আপনাদের নিজের ভূমিতে কাটানো হবে না, তবে আগামী ঈদ আপনি নিজের বাড়িতে পালন করতে পারবেন।”

তবে, প্রশ্ন হল, বাংলাদেশের মতো একটি স্বাধীন রাষ্ট্র মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যেমন আরাকান আর্মির সাথে কিভাবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতে পারে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একমাত্র আরাকান আর্মির সাথে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে, তবে এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস এই বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের মধ্যে, যেমন আমেরিকা, চীন এবং ভারত, মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে পরোক্ষভাবে সমর্থন দেয়ার মধ্যে বাংলাদেশ বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। মুসলিম ভ্রাতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ কখনোই রোহিঙ্গা বিরোধী কোনো পদক্ষেপে অংশ নেয়নি।

এখন আরাকান আর্মি যখন বহুজাতিক রাষ্ট্র গঠনের কথা বলছে, তখন তাদের আন্তরিকতার প্রমাণ হবে যদি তারা রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণভাবে আরাকানে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে রাজি হয়। যদিও আরসা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছিল, এখন তারা গ্রেফতার হয়ে পরিষ্কার বার্তা পেয়েছে যে বাংলাদেশ আরাকান আর্মির সাথে কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত নয়। এখন দেখার বিষয় হল, আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে কিনা।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।