
ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেও শেষ পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। তবে নিজের প্রথম ম্যাচে ম্যাচজুড়ে যে খেলা উপহার দিলেন দেওয়ান হামজা চৌধুরী, তার প্রশংসা হচ্ছে চারদিকে। তাকে ঘিরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ নিয়ে আশাবাদী অনেকেই। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে কেমন খেললেন হামজা, বাংলাদেশের কী করা উচিত ছিল- এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক ফুটবলাররা। তাদের সঙ্গে কথোপকথনের অংশটুকু তুলে ধরা হলো :
শেখ মোহাম্মদ আসলাম
ভারত যে প্লেসিং ফুটবল খেলে, সেটা খেলতে পারেনি। আপ অ্যান্ড ডাউন খেলা হয়েছে। আমাদের দল জিতেও যেতে পারত। ভালো স্ট্রাইকার থাকলে তখন অন্তত একটা গোল কনভার্ট করতে পারত। খেলায় যোজন যোজন যুদ্ধ হয়েছে। যারা গোল করতে পারত, তারাই জিতে যেত। সেদিক থেকে বাংলাদেশ কিছুটা এগিয়ে ছিল। কিন্তু আমাদের দুর্বল ফিনিশিংয়ের কারণে আমরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি।
পুরো মাঠে খেলেছে হামজা। ও মূলত আর্কিটেক্ট। সে সবাইকে নিয়ে খেলেছে। এটা একটা বিরাট ব্যাপার। ও যেখানে যাওয়া দরকার, সেখানে খেলেছে। ও চৌকস খেলোয়াড়। সে জায়গামতো ছিল, যেন আমরা গোল না খাই, পারলে আমরা গোল দেব। এরকম একটা এজেন্ডা নিয়ে খেলেছে। হামজার উপস্থিতিতে আমাদের দল খুবই উজ্জীবিত হয়ে ফুটবল খেলেছে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। গোলের সুযোগও এসেছে। শুধু আমাদের দুর্বল ফিনিশিংয়ের জন্য আমরা গোল পাইনি। তা না হলে আমাদের জেতা ম্যাচ ছিল এটা।
কায়সার হামিদ
বাংলাদেশের জন্য ব্যাড লাক ছিল। এত সুযোগ পাওয়ার পরও হোম দলের বিপক্ষে গোল করতে না পারা আফসোসের। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ ভালো খেলেছে। র্যাংকিংয়ের দিক থেকেই আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। তাছাড়া ঘরের মাঠে খেলেছে তারা। যতটুকু খেলা দেখাল বাংলাদেশ, দারুণ ছিল। বিশেষ করে প্রথমার্ধে চারটি ওপেন নেট সুযোগের মধ্যে একটিও যদি গোল হতো, তাহলে আমরা জয়ের মুখ দেখতে পারতাম। দ্বিতীয়ার্ধে ভারত কিছুটা চাপ তৈরির চেষ্টা করেছে।
আমি হামজাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সে একজন পেশাদার ফুটবলার। প্রথমার্ধে সে চিন্তা করল চারটি সুযোগ যখন মিস হয়েছে, দ্বিতীয়ার্ধে গোল করা যায় কি না। সেটি বড় কথা নয়, আমাদের গোল খাওয়া যাবে না। এজন্য সে একটু ডিফেন্সিভ পজিশনে চলে গেছে। কারণ এখানে এক পয়েন্ট অর্জন করা মানেই জেতা। এক পয়েন্ট নিয়ে যদি আমরা বেরিয়ে আসতে পারি, তাহলে পরবর্তী খেলা বাংলাদেশে। স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাডভান্টেজ পাবে। আমি আশা করি সামনে বাংলাদেশ আরো ভালো খেলবে।
সাঈদ হাসান কানন
হামজা দারুণ এক খেলোয়াড়। ও নিজেকে প্রমাণ করেছে সে সেরা খেলোয়াড়। ও যে আমাদের দেশের টিমের সঙ্গে খেলল, এটা তো আমাদের জন্য বিরাট পাওয়া। আমি মনে করি, বাংলাদেশের ফুটবলের ক্রান্তিলগ্নে এসে যে আলোড়ন সৃষ্টি করল, এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। মানুষ ফুটবল ভুলে গেছে। মানুষের মুখে ফুটবল নেই। হামজা আসার পরই সবার মুখে এখন ‘ফুটবল ফুটবল’। এটা বিরাট আশীর্বাদ। এখন মানুষ ফুটবল নিয়ে ভাবছে। নতুনভাবে ফুটবলে উজ্জীবিত হয়েছে দল। হামজা আসায় আমাদের লোকাল খেলোয়াড়রা উজ্জীবিত হয়েছে। হামজা তো একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে। অন্যরাও আগের চেয়ে অনেক ভালো ফুটবল খেলেছে।
তবে অ্যাটাকিং সাইড খুবই দুর্বল আমাদের। আমি বলব, গত ম্যাচে কয়েকজনকে খেলাতে পারত। আল আমিন একজন স্ট্রাইকার, লিগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার সে। ওকে কেন খেলাল না কোচ! আল আমিনকে খেলানো উচিত ছিল। মোরসালিনকে খেলানো হয়েছে; কিন্তু বসুন্ধরা কিংসের রেগুলার খেলোয়াড় নয় সে। জনিও রেগুলার খেলোয়াড় নয়। ২০ মিনিট বা ৩০ মিনিট খেলে। সেরা খেলোয়াড়রা বসে ছিল। যেমন, সাদ লেফট ব্যাক। ইসাও ভালো ফুটবল খেলছে লিগে। যারা লিগে খেলেছে রেগুলার, তাদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। এটা কোচের ব্যাপার। আল আমিনকে আনলে গোল পাওয়ার সুযোগ ছিল।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |