প্রচ্ছদ হেড লাইন যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিরল খনিজ দ্বন্দ্ব: যা পাওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশে

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিরল খনিজ দ্বন্দ্ব: যা পাওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশে

আইফোন তৈরিতে ব্যবহার হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ‘বিরল খনিজ’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। এই খনিজগুলোর বড় একটি অংশ এখনো চীন থেকে আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সাম্প্রতিক টানাপোড়েনে ভবিষ্যতে সেগুলোর সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের জবাবে চীন বিরল খনিজের রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করছে। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, চীন সম্প্রতি বেশ কিছু বিরল মৌলের রপ্তানি সীমিত করেছে। এতে করে মার্কিন প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাত বড় ধরনের চাপে পড়তে পারে। এই বিরল খনিজ ১৭টি মৌলের সমন্বয়ে গঠিত, যেগুলো উচ্চ প্রযুক্তির নানা যন্ত্রাংশ তৈরিতে অপরিহার্য— যেমন স্মার্টফোন, চিপ, রাডার, জেট ইঞ্জিন, সৌর প্যানেল এমনকি মিসাইলেও ব্যবহৃত হয়। তবে এগুলো উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ জটিল এবং ব্যয়বহুল।

বিশ্বজুড়ে বিরল খনিজের সবচেয়ে বড় মজুত রয়েছে চীনে— প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ টন। এরপরে রয়েছে ব্রাজিল, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। উৎপাদনের দিক থেকেও চীন এগিয়ে। ২০২৪ সালে দেশটি ২ লাখ ৭০ হাজার টন বিরল খনিজ উৎপাদন করেছে।

বাংলাদেশে বিরল খনিজের সম্ভাবনা

বাংলাদেশে এখনো সরকারি পর্যায়ে বড় কোনো খনন প্রকল্প শুরু না হলেও প্রায় ২০ বছর ধরে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) বিভিন্ন এলাকায় বিরল খনিজের সন্ধানে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের গবেষণায় দেখা গেছে, যমুনা, ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদীর বালুতে বিরল খনিজের অস্তিত্ব রয়েছে। এছাড়া সৈকতের বালু, জেগে ওঠা চর, এমনকি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা ও ছাইতেও মিলেছে এই মূল্যবান খনিজ। যেমন, যমুনার বালুতে পাওয়া গেছে স্যামারিয়াম, ইউরেনিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টারবিয়াম ও ডিসপ্রোসিয়াম। ধরলা নদীর বালুতে প্রতি কেজিতে ৬০ থেকে ১৭৬ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিরল খনিজের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। বড়পুকুরিয়ার কয়লায় পাওয়া গেছে প্রতি কেজিতে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি বিরল খনিজ, যা অর্থনৈতিকভাবে উত্তোলনযোগ্য বলে ধরা হয়।

পরবর্তী করণীয়

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের নদীগুলো প্রতিবছর প্রায় ১ বিলিয়ন টন বালু বইয়ে আনে, যার মধ্যে বিরল খনিজ থাকতেই পারে। তবে এসব খনিজের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা যাচাই করতে আরও গবেষণা, উন্নত পরীক্ষাগার ও প্রযুক্তির প্রয়োজন। বিশ্ব যখন বিরল খনিজ ঘিরে নতুন ভূ-অর্থনৈতিক যুদ্ধে নামছে, তখন বাংলাদেশ চাইলে এর থেকে উপকৃত হতে পারে— যদি সময়মতো প্রস্তুতি নেওয়া যায়।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।