
আমাদের গুমের সেলগুলোর ভেতরেই টয়লেট ছিল। জেলের টয়লেটগুলোর নিয়ম হচ্ছে, হাফ দেয়াল — উপরের অংশ ফাঁকা। টয়লেটের পানির অবস্থা ছিল অত্যন্ত নোংরা, মাঝে মাঝে ট্যাপ দিয়ে কালো পানি বের হতো। সেই পানি খাবার মত ছিল না। নিয়ম ছিল আমাদের বোতলে করে ফিল্টার থেকে পানি এনে দেওয়া। কিন্তু সব গার্ড পানি এনে দিত না — হাতে গোনা কয়েকজন বাদে। আমরা অপেক্ষায় থাকতাম, কবে সেই গার্ডদের ডিউটি পড়বে আর পানি এনে দেবে। দুই লিটারের বোতলে পানি এনে দুই-তিন দিন চালাতে হতো মাঝে মাঝে।
যত গার্ড ছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ছিল ইমরান নামে একজন। অত্যন্ত বিচ্ছিরি চেহারা আর হাতির মতো শরীর। দেখলে মনে হতো জল্লাদ। ডিউটিতে এসেই আগে যত লাইট আছে জ্বালিয়ে দিত। পানি দিতে বললে বাজে ভাষায় গালি দিয়ে বলত, “টয়লেটের পানি খা।” এমনকি তার টিমের কোনো গুমের ভিকটিম যদি বারবার পানি চাইত, তাকে অফিসে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করত।
ছবিতে যে ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছেন, সেই হচ্ছে ইমরান। জানি না, এই সন্ত্রাসীদের কোনো বিচার হয়েছে কিনা। কোর্টে হাজিরার সময় প্রায়ই সিটিটিসির সন্ত্রাসীদের দেখি — এখনো বহাল তবিয়তে আছে। এখনো হাসিমুখে মিথ্যা মামলার সাক্ষী দিতে আসে। এখনো মিথ্যা মামলা নিয়ে তাদের কোনো অনুশোচনা নেই, আফসোস নেই।