প্রচ্ছদ হেড লাইন ২০ হাজার টাকা বেশি চাওয়ায় যৌনকর্মীর সাথে গা শিউড়ে ওঠার মতো ঘটনা...

২০ হাজার টাকা বেশি চাওয়ায় যৌনকর্মীর সাথে গা শিউড়ে ওঠার মতো ঘটনা ঘটালো

হেড লাইন: খোকন ভূইয়া ক্যাফে-ক্যান্টিনে কাজ করেন। এক রাতে কাজ শেষে ফার্মগেট ফুটওভার ব্রিজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ভাসমান যৌনকর্মী আসমা ওরফে লিমা বেগম তাকে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। খোকন তার ডাকে সাড়া দেন। দু’জন দরদাম করে তিন হাজার টাকা ঠিক করেন। এরপর তারা শ্যামলীর একটি হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে উঠে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন। কাজ শেষে খোকনের কাছে চুক্তি করা টাকার থেকে আরও বিশ হাজার টাকা বেশি দাবি করেন আসমা। এতে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে আসমাকে গলা টিপে এবং ওড়না দিয়ে মুখ পেঁচিয়ে হত্যা করেন খোকন। ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার শ্যামলী এলাকার হোটেল রাজ ইন্টারন্যাশনাল (আবাসিক)-এর ৬ষ্ঠ তলার ৬০২ নম্বর কক্ষে খুন হন আসমা। এরপর নিহতের স্বামী সজিব আলী শেখ শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামি খোকনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খোকনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। চার্জশিটে এসব কথা উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই সুকান্ত বিশ্বাস। আসমার শরীরে ছিল যৌন অত্যাচারের চিহ্ন: চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের দেওয়া ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিকটিম মোছা. আসমা ওরফে মোছা. লিমা বেগম কবিতা (২৫) এর মৃত্যুটি শ্বাসরোধ জানিত হত্যাকাণ্ড। তার শরীরে যৌন অত্যাচারের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ডিএনএ পরীক্ষকের মতামত পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনাস্থলে থেকে সংগৃহীত নমুনার সঙ্গে আসামি মো. খোকন ভূইয়ার ডিএনএ প্রোফাইলের সবকিছুর মিল পাওয়া গেছে।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি খোকন ভূইয়া বলেন, তিনি ক্যাফে-ক্যান্টিনে কাজ করেন। ঘটনার দিন রাতে আসামি নিজের কাজ শেষে ফার্মগেট ওভার ব্রিজের ওপর যায়। সেখানে থাকা ভিকটিম, আসামিকে ডেকে বলেন ‘কাজ করবা’ নাকি। কারণ, ভিকটিম একজন দেহ ব্যবসায়ী। আসামি রাজি হয় এবং দরদাম ঠিক হয় তিন হাজার টাকা। ভিকটিম তার পরিচিত সিএনজিতে করে আসামিকে শ্যামলীর (ঘটনাস্থল) হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে তারা দুইবার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। এরপর ভিকটিম আসামির কাছে নির্ধারিত টাকার চেয়ে আর ২০ হাজার টাকা বেশি দাবি করেন। আসমা একজন যৌনকর্মী ছিলেন। তাকে যৌনকাজে চুক্তিতে নিয়ে যায় খোকন ভূইয়া। খোকনের কাছে চুক্তির চেয়ে বিশ হাজার টাকা বেশি দাবি করেন আসমা। এতে দুই জনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে খোকন ভিকটিম আসমাকে গলা টিপে ধরে এবং ওড়না দিয়ে মুখ পেঁচিয়ে হত্যা করেন। আসামি খোকন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

টাকা না দিলে সে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করার হুমকি: জবানবন্দিতে খোকন আরও বলেন, আমি ভিকটিমকে বলি যে দাম ঠিক করে এনেছি সে টাকাই দিয়েছি। ভিকটিম তাকে বলে, আরও টাকা না দিলে সে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করবে। এরমধ্যে ভিকটিম নিচে যায় এবং সাদা পাউডার জাতীয় নেশাদ্রব্য এনে নিজেও সেবন করে এবং তাকেও সেবন করায়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে আবার ঝামেলা হয়। হাতাহাতিও শুরু হয়, এক পর্যায়ে আসমাকে গলা টিপে ধরে এবং তার ওড়না দিয়ে মুখ পেঁচিয়ে দেয় খোকন। এরপর আসমার হাত খাটের সঙ্গে বেঁধে রেখে পালিয়ে যান। পরে জানতে পারেন মেয়েটি মারা গেছে।