
দেশজুড়ে: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামে সোহেল রানার বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর পাশে তাদের দুই সন্তানকে সমাহিত করা হয়। এর আগে সকালে সোহেল ও তার ছেলে রায়সুলের মরদেহ উদ্ধার হয়। গত শনিবার সোহেলের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার ও রোববার মেয়ে মাহমুদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোহেল কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে ৯ জনের মৃত্যু হয়। জীবিত উদ্ধার হয়েছেন ১২ জন।
সোহেলের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব হাইওয়ে থানা। ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি সাজু মিয়া বলেন, ‘সোহেল রানা আমাদের সহকর্মী ছিলেন। এভাবেই পুরো পরিবারটি দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার খবরে আমরা মর্মাহত। তার পরিবারের সবার (৪ জনের) মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। সোমবার বাদ জোহর ভৈরব হাইওয়ে থানার সামনে সোহেল ও তার দুই সন্তানের জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য স্বজনরা গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় প্রিয় একজন সহকর্মীকে বিদায় জানাতে আমাদের চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি। এমন মৃত্যু আমাদের সব সময় কষ্ট দিবে।’এদিকে সোমবার বিকেলে সোহেলের বাড়িতে সবাই মরদেহের অপেক্ষায় আছেন। তিনজনের মরদেহ বাড়িতে আনার খবরে ভিড় করেন এলাকার লোকজন। সন্ধ্যার কিছু আগে অ্যাম্বুলেন্সে সোহেল ও তার দুই সন্তানের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। বাদ মাগরিব জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের সঙ্গে দুই শিশু সন্তানকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়। এর আগে রোববার একই স্থানে মৌসুমী আক্তারের মরদেহ দাফন করা হয়।
জানাজার আগে ছেলে ও নাতি-নাতনির কফিনের সামনে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোহেলের বাবা। এ সময় তাদের বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতে বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। সোহেলের বাবা আবদুল আলিম জানান, দিনে-রাতে যখনই সময় পেতেন সোহেল মোবাইলে ভিডিও কল দিয়ে সন্তানদের দেখাতেন। বলতেন এবারের ঈদটা স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে করবেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালেও সোহেল মোবাইলে কথা বলেছে। ডিউটির ফাঁকে যখনই সময় পেতেন কল দিয়ে প্রতিদিন আমাদের খবর নিত। এখন আর তো সোহেলের মোবাইল থেকে কল আসবে না।’