
ঈদ উপলক্ষ্যে নিজ দোকানের জন্য জুতা কিনতে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন সুজন। বাড়িতে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। আর কিছুদিন পরে ফুটেফুটে সন্তান দুনিয়ায় আগমন করবে- এই প্রতিক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অনাগত সন্তানের মুখ দেখার আগেই পরপারে পাড়ি জমাতে হলো তাকে। ঘাতক ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) রাতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে ধাক্কা দেয় ওই ঘাতক ট্রাক।
নিহত সজিবুল ইসলাম ওরফে সুজন (২৮) টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল বাসেদের ছেলে। বড়চওনা বাজারে সুজনের অনলাইন শপ নামের একটি জুতার দোকান ছিল। বড়চওনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে তাঁর দোকানে বিক্রির জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মোটরসাইকেলে করে ঢাকায় গিয়েছিলেন পাইকারি মূল্যে জুতা কেনার জন্য। ফেরার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার তক্তারচালা বাজারে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাঁকে ধাক্কা দেয়। সজিবুল ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
সুজনের বাবা আবদুল বাসেত আহাজারি করে বলেন, ‘আমার বাবা (সজিবুল) প্রিয় সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারল না। আল্লাহ গো তুমি একি করলে!’জুয়েল শিকদার নামে সুজনের এক ভাগনে ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মামা সব সময় এতিমদের জন্য কাজ করতেন। তাদের সাহায্য–সহযোগিতা করতেন। তাদের খাবার দিতেন। ছয় দিন আগেও তিনি এতিমদের খাওয়াইছেন। তিনি কি জানতেন তাঁর সন্তান এতিম হয়ে দুনিয়াতে আসবে? পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার বেলা এগারোটার দিকে বড়চওনা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। এদিকে সুজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।