প্রচ্ছদ হেড লাইন ঝলমলে আকাশ হঠাৎ চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার, এরপর শুরু হয় বিভীষিকাময় তাণ্ডব

ঝলমলে আকাশ হঠাৎ চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার, এরপর শুরু হয় বিভীষিকাময় তাণ্ডব

রোদঝলমলে আকাশ হঠাৎ চারদিক অন্ধকার হতে শুরু করে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ৯টা ৩৮ মিনিট। চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার, যেন গভীর রাত নেমেছে। সামান্য বৃষ্টির পরই দমকা হাওয়া আর বজ্রাঘাতে সবখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রোববার (৭ এপ্রিল) সকালে বাগেরহাট শহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক কালবৈশাখীতে বাগেরহাটজুড়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘরের চাল ও গাছপালা উপড়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, বিলবোর্ড। বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলায় দেড় শতাধিক কাঁচা ও আধপাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ের সময় বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার দড়াটানা নদীর তীরে মারিয়া পল্লীতে বিধ্বস্ত হয়েছে ১০টি ঘর। এ সময় আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। নিভা রায় নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। কচুয়ায় বজ্রাঘাতে নিহত হয়েছে চরসোনাপুর মাদরাসার দপ্তরি নিক্সন সরদার (৩৫)।

জেলা কেন্দ্রীয় বাস-টার্মিনালে একটি সাইনবোর্ডের টাওয়ার ভেঙে দাড়িয়ে থাকা একটি যাত্রীবাহী বাসের ওপর পড়ে বাস শ্রমিকসহ বিভিন্ন স্থানে ১৫ জন আহত হয়েছে। ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাগেরহাট সদর উপজেলার গোবরদিয়া, বাদেকাড়াপাড়া, ডেমা, খারদার, বাসাবাটি গ্রামসহ পৌর এলাকা ও রাধাবল্বভ এলাকার খ্রিষ্টান মারিয়া পল্লী। এদিকে ঝড়ের শুরুতে সকালে জেলাজুড়ে দিনের বেলায় নেমে আসে রাত। আকাশ কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে বজ্রবৃষ্টি হলেও দিনের বেলায় এমন অন্ধকার আগে দেখেনি কেউ। প্রায় ২০ মিনিট অন্ধকারে ঢেকে থাকায় বন্ধ হয়ে যায় মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম। বাগেরহাট জেলা শহরসহ ৯ উপজেলার সবখানেই এমন অস্বাভাবিক দৃশ্য চোখে পড়ে সবার। এরপর বজ্রাঘাতের সঙ্গে অবিরাম বৃষ্টিপাত শুরু হলে আকাশ পরিচ্ছন্ন হয়। ঝড়ে বিধ্বস্ত অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। সরকারের কাছে জরুরিভাবে সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন জানান, আকস্মিক ঝড়ে বাগেরহাটের দেড় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় ঘরবাড়ি ও গাছপাড়া উপড়ে পড়েছে। ঝড়ের মধ্যে গরু আনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে কচুয়া উপজেলার চর সোনাকুড় আলিম মাদরাসার দপ্তরি লিক্সন সরদার নিহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারিভাবে ৩ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিকেলে জেলা সদরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসলেও অধিকাংশ এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ এবং তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।