
সারাদেশ: মাদারীপুরে বিদ্যালয়ের টয়লেটে ৬ ঘণ্টা আটকে থাকার পর শ্বাসরুদ্ধর অবস্থায় এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম রাফিন। সে ৯নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনাটি শনিবার (১৮ মে) জানাজনি হলেও বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নে ওই ঘটনা ঘটে। পরে অসুস্থ অবস্থায় শিক্ষার্থী রাফিন হোসেনকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে।
এলাকাবাসী ও ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচখোলা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে রাফিন। সে ৯নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবারও স্কুলে যায় রাফিন। ওই দিন তাদের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর রাফিন টয়লেটে যায়। পরে দপ্তরি খোকন খান টয়লেট চেক না করেই বাইরে থেকে রশি দিয়ে আটকে দেন। পরে শিশুটি দরজা খোলার জন্য চিৎকার করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এ সময় বারবার দরজা খোলার জন্য চিৎকার করায় শিশুটির মুখ দিয়ে রক্ত আসে। ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর শিশুটি এক পর্যায় টয়লেটের দরজা খুলতে সক্ষম হয়।
এদিকে বিদ্যালয় ছুটির পর শিশুটি বাড়িতে না ফেরায় তার আত্মীয়-স্বজন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আত্মীয়ের বাড়িতে খুঁজ-খবর নিতে থাকে। এদিকে সন্ধ্যা ৬টার পর বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে একটি মুদি দোকানদারকে বিদ্যালয়ের কেচি গেট খোলার জন্য ডাকাডাকি করে শিশুটি। এক পর্যায়ে মুদি দোকানদার শিশুটির কান্না শুনে কাছে ছুটে যান। পরে তালা ভেঙে তিনিসহ কয়েকজন মিলে রাফিনকে উদ্ধার করে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
এলাকাবাসী এই ঘটনাকে ১৯৮০ সালের শিশুতোষ চলচ্চিত্র ছুটির ঘণ্টার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ৬ ঘণ্টা পর স্কুলের বাথরুম থেকে জীবিত ফিরে এলেও আর কিছু সময় হলেই ছুটির ঘণ্টা বেজে যেত শিশুটির। মুদি দোকানদার বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাথরুমের আটকা পড়ার পরে কোনো মতে দরজা খুলেই তিন তলার বেলকনি থেকে আমাদের ডাক দেয়। পরে আমরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক রওশন আরা বেগম বলেন, ওই দিন আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। বের হবার আগ পর্যন্ত এমন কিছু আমার নজরে পড়েনি। আমি পরে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করা হবে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।