নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, হঠাৎ করে কিছু একটা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। তাই আপনাদের জাগ্রত করতে এসেছি। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ লিটনে সভাপতিত্বে ফতুল্লার দাপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন বালুর মাঠে নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমি কোথাও ভোট চাইনি এবং চাইবও না। কারণ সমস্যাটা আমার না আপনাদের। আমি এখানে এসেছি আপনাদের ঘুম থেকে জাগাতে। শামীম ওসমান তার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, ৯৬ তে আমরা যখন এসেছি আল্লাহর হুকুমে সকলের সহোযোগিতা নিয়ে দুই হাজার ৬০০ কোটি কাজ করেছিলাম আমি আমার নির্বাচনী এলাকায়। শুধু ফতুল্লা থানা এলাকায় ৬২৫ কোটি টাকার কাজ করতে পেরেছি। পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটা বিল্ডিংয়ের কাজ করেছি। কৃষিকাজের জন্য ডিএনডি প্রজেক্ট করা হয়েছিল। পানিবন্দি ডিএনডি প্রজেক্টে কাজ করেছি। ঢাকা-নারায়নগঞ্জ সংযোগ করেছি। প্রথমে করলাম এক লেন,তারপর দুই লেন, তারপর চার লেন। ডাবল রেল লাইনের কাজ করেছি। পঞ্চবটীতে একটা ফ্লাইওভার করা হচ্ছে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যায়ে। ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল করা হবে যা প্রধানমন্ত্রী পাশ করিয়ে দিয়েছেন। যা আগামীতে সরকার গঠন করলে তা হয়ে যাবে। লিংক রোডে পলিটেকনিকাল কলেজ হচ্ছে। বেশ কিছু কাজ চলমান রয়েছে। আগামীতে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ মেট্রোরেল লাইন করব।
তিনি বলেন, ৭৪ সালে চাইলে আমার বাবা নারায়ণগঞ্জের বহু সহায় সম্পত্তিসহ অনেক কিছু করতে পারতেন। তিনি তা না করে আমার ভাইয়ের বিয়ের জন্য ও দল পরিচালনা করার জন্য গোপনে বাড়ি বন্ধক রাখে। ৯০০ টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। আমি ও গোপনে আমার বাড়ি বন্ধক রেখেছিলাম ২০২৩ সালে। সাংবাদিকরা তা প্রকাশ করে দিয়েছে। আমাদের বাড়ি নিলামে উঠলে কোনো আত্নীয়-স্বজন সেদিন এগিয়ে আসেনি। সেদিন ৪৪ হাজার শ্রমিক এক টাকা করে চাঁদা দিয়ে সেদিন বাড়ির বন্ধক থেকে ছুটিয়েছিল।
এর আগে তিনি বিকেলে ফতুল্লার পিলকুনি পাঁচতলা এলাকায় অপর এক নির্বাচনী উঠান বৈঠকে তিনি আগত জনতাকে বলেন, আমি আপনাদের সতর্ক করতে চাই। এবারের নির্বাচন ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ। ঈগল আকাশে ২১ দিন টানা উড়তে পারে। এ সময়ের মধ্যে সে এমন শিকার খোঁজে যা মিস হবে না। যখন সে তা পায় তখনই ছোঁ মেরে হানা দেয়। আমাদের দেশের মানচিত্রের ওপর ঈগল উড়ছে, তারা ওঁৎ পেতে আছে। ওরা চায় ফিলিস্তিনের গাজার মতো দেশটাকে বানাতে। তাদেরকে আমাদের ঠেকাতে হবে।
শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন আছে। আমাদের জেলার ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। কেউ পায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ পায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। এত দূরে ছেলেমেয়েদের পাঠাতে হবে বলে বাবা-মায়েরা তাদের লেখাপড়া বন্ধ করে দেন। এই কথা চিন্তা করেই নারায়ণগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। অবশেষে পার্লামেন্টে বিল পাশ হয়েছে যে এখানে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এতে করে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ রক্ষা হবে। আমি চাই আমাদের বাচ্চারা ভালো থাকুক।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে রাতের বেলাতে আঠারোর নিচে ছেলেরা ঘর থেকে বের হলে বাবা-মা তেমন একটা বাধা দেয় না। কিন্তু মেয়েরা রাতে বের হবার চেষ্টা করলে বাবা-মা বারণ করেন। তারা বলেন, বাইরে ডাকাত, চোর, দস্যু ও মাদকাসক্তরা আছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জকে সেফ করতে হবে। মনে রাখবেন, নিজের ঘর নিজেকেই পরিষ্কার করতে হবে। এজন্য আমি একটি সংগঠন করতে চাচ্ছি যার নাম হবে ‘প্রত্যাশা’। ১৮ থেকে ৩০ বয়সীদের নিয়ে আমরা কাজ করব। তরুণদের নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা ৮০ হাজার মানুষ মিলে যদি মাদক, সন্ত্রাস, দস্যুদের বিরুদ্ধে দাঁড়াই আমাদের কেউ থামাতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, ফতুল্লায় অনেক রাস্তায় সংস্কারের প্রয়োজন আছে। আপানদের যে কি সমস্যা হচ্ছে তা আমি জানি। ইনশাল্লাহ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ফিরলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ফতুল্লায় রাস্তার সমস্যা দূর হবে। বিএনপি-জামায়াত তারা এখন কোথায় গেল? তাদের আমি খুঁজে পাচ্ছি না। ট্রেনের ভেতর একজন মা-শিশুকে যেভাবে পুড়িয়ে মারা হলো তখন প্রতিটি মায়ের চোখে যে প্রতিবাদ দেখেছি আমার মনে হয় তারা আবারো কোনো হামলার চেষ্টা করলে শুধুমাত্র মহিলারাই তাদের রুখে দাঁড়াবে। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ আজ সোচ্চার হয়েছে
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |